মে 2016


সকাল ন’টা বাজে, আমার বউ শুয়ে আছে,
সে সম্পূর্ণ সুস্থ্য মানুষ।
আমার মা অসুস্থ্য ! গত রাতেও মায়ের জ্বর অনেক ছিল,
এখন কত জানি না ।
বউকে বললাম, এখনো উঠবে না ? গিয়ে দেখো মায়ের কী অবস্থা ?
জ্বর বেশী হলে কপালে জল ঢালতে হবে ।
সকালের নাস্তার কি ব্যবস্থা করবে ?
বউ মাথার ওপর থেকে কাথাটা সরিয়ে বলল-
প্যাক প্যাক করা বন্ধ করবে ? ঘুমাতে ভালো লাগছে, এখনি উঠতে পারবো না ।
এতো দরদ হলে গিয়ে নাস্তা বানাও, আমি পারবো না ।

ও ঘর থেকে মা সব শুনে বললেন, 
কীরে অপু আবার কি হল তোদের ? একটু এদিকে আয় ।
আমি দৌড়ে মায়ের কাছে যাই।
মাত্র ক’টা ঘন্টার ব্যবধানে, রাতের পর থেকে মায়ের চেহারা কী হয়েছে !
কপালে হাত দিতেই মা বললেন-
আলনা থেকে বাজান কাপড়টা দে তো,
এইটা নষ্ট হয়ে গেছে। একটু কালুর মাকে খবর দে, ও এসে ধুয়ে দিয়ে যাবে।

ছোট বেলায় মায়েরা সন্তানদের কাপড়ে কিংবা গায়ে লেগে থাকা গু মুত ধূয়ে দেন,
কোন মায়ের মুখ থেকে তো শোনা যায় না যে-
 কী এক সন্তান পেট থেকে হয়েছে তার গু মুতে বাড়িটা গন্ধ হয়ে গেছে !
আমি ভাবলাম, কালুর মাকে ডাকবো না, মায়ের কাপড় আমি নিজেই ধুবো,
মা যদি আমার সব যত্ন করতে পারেন, আমি কেন তাঁকে পারবো না !
বউ হয় তো ও ঘর থেকে কাপড়ের কথা শুনেছে, তবুও উঠে আসে নি ।
আমি কি বলব বউকে ! গালি দিব ! তাতে কি তার সুমতি হবে, যদি মন থেকে না হল !

মায়ের অসুস্থ্যতা সাত দিন ছিল।
রাতে রাতে উঠে গিয়ে আমি কপালে জল পট্টি দিয়েছি, সকালে উঠে রান্না করেছি।
বউয়ের মনে কি এর জন্যে কোন ভাবনা হয়েছে ?

                                                                                         ১৩-০১-২০১২

কবিওকবিতা

সেই ছোট্র বেলার কথা মনে আছে,
মনে আছে বাবা আমাদের দুই ভাইকে হাটে বসা
নাপিতের সামনে বসিয়ে তাঁকে চার টাকা দিয়ে বলতেন-
"এই লও মাথার চুলগুলো একেবারে খাটো করে দিও ওদের" ।
বাবা চলে গেলে নাপিককে বলতাম, বেশী খাটো কিন্তু করবেন না ।
পরের দিন আয়নায় দেখি, চুল কাটা একদম খারাপ হয়েছে ।
ভাবতাম, স্কুলে গেলেও তো সহপাঠিরা নানা কথা বলবে,
দুঃখের কথা কাকে বলব ?
চুল বড় না হওয়া পর্যন্ত আর স্কুলে যাইনি;
যদিও লোকটার কাছে অনেকবার চুল কাটিয়েছি, এতো খারাপ করেন নি ।
সেই দুই টাকার চুল কাটানোর কালটা পেরিয়ে গেছে,
এখন বিশ টাকার নিচে হয়না ।
বাবা ছোটকাল থেকেই আমাদের দুই ভাইকে এক চোখে দেখতেন,
কারো প্রতি কম বেশী করতেন না ।
খাবার সময় মাছের মাথা দুটো না হলে কাউকেই
দিতে দিতেন না, এমন কী রান্নার করতে দিতেন না।
ডিম রান্না একটা হলে দুই ভাগ করে দিতেন, আর উনারা ভর্তা দিয়ে খেতেন ।
ঈদের দিন দুই জনকে দুই টাকা করে দিতেন,
তখন অবশ্য উহার মূল্য বর্তমানের মত ছিল না ।
সার্ট কিনে দিলে একই রঙের দুটো কিনে দিতেন, কারণ একটাই-
কেউ যেন বলতে না পারে ওরটা ভালো আমারটা ভালো না ।
বাবা স্বপ্ন দেখতেন দুই ছেলেকেই উচ্চ শিক্ষিত করবেন,
দুই ছেলের জন্য যৌতুক বিহীন দুটো লাল টুকটুকে বউ আনবেন ।
বাবার ধ্যান ধারনাটা সত্যিকারে ভালো ছিল, রাগী স্বভাবের
লোকটার মনে যে এতো ভালো কিছূ থাকতে পারে ভাবা যায় না ।
এখন আমরা বড় হয়েছি, চাকরি করি, বিয়ে করেছি ।
বাবাও বিদেশ থেকে দেশে এসেছেন, এখন মজার করার জন্য বাবাকে বলি,
বাবা, আমায় একটা রঙ্গিন সার্ট কিনে দিবে ?
বাবা বলেন, বাজান ? এখন তো কামাই করতে পারি না,
আমাকেই আরো তোমায় কিনে দিতে হবে ।
বুঝতে পারলাম বাবা কথাটায় কষ্ট পেয়েছেন,
তারপর আর কখনো মজার ছলেও অমন কথা বলি নি।
২৪-০২-২০১২

কবিওকবিতা

ঘুমিয়ে পড়ি, মরণের চেয়ে কম কিসে ?
চোখদ্বয় বন্ধ হয়ে যায়,
দুনিয়ার আলো বাতাস তখন যেন কিছু বুঝি না ।
স্বপ্ন দেখতে থাকি,
তা কখনো কালো কিংবা সাদা হয়
কখনো কখনো তা মনে রাখার মত হয় না ।
ঘুম থেকে জেগে মনে হয় কিছূ দেখলাম
অথচ কি দেখলাম তা মনে নেই
তা ভাবতে ভাবতে আবার ঘূমিয়ে পড়ি।
ঘুম আর ঘুম
আবার নতুন করে নতুন ভাবে জাগি,
নতুন কাজে মন বসাই
ঝরে যায় ক্লান্তির ধকল ?
ফিরে আসে শরীরে এক মুঠো চেতনা ।

ঘুমিয়ে পড়ি, অনন্ত- যাত্রায় মরণ নয় কি ?
চোখদ্বয় বন্ধ হয়ে যায়,
আখিরাতের আলো বাতাস তখন কোথায় চলে যায় জানি না।
স্রষ্টাকে জপকে থাকি,
তা তখনের জন্য ব্যর্থ কিংবা অস্বার্থক
 ঐ জপনামা কোন কাজেই আসবে না ।
ঘুম থেকে মনে হয় স্রষ্টাকে দেখলাম
 অথচ হাত দিয়ে ধরলে পাই না
ডানে বামে তাঁকিয়ে আবার ঘূমিয়ে পড়ি ।
ঘুম  আর ঘুম
আবার নতুন করে নতুন জবাবদিহি,
নতুন ভাবে সাক্ষীর পালা
ভয় ভয়ে  অনন্তকাল ?
অতঃপর সুখ নয়তো কষ্ট ।

            ০৯-০১-২০১২


কবিওকবিতা
আমার বুকের ভিতর একটা স্বাধীনতার বস্তা আছে
রংটা তার হরেক রকমের,
যদি বলি নীল হয়ে যান তিনি তাই হন
যদি বলি কালো হন তবে কিছূটা গড়িমসি করলেও হন ।
গড়িমসি করার ক’টা কারণ আছে,
স্বাধীনতা মানে তো নতুন কোন কালো অধ্যায় নয়
যেখানে কান্নার আহাজারি পড়ে যাবে !
কোন প্রেমের স্বপ্নেরা হতাশায় ভুগবে !
নতুন কোন কালোর উথান হবে !

আমার বুকের ভিতটা কেমন যেন গর্বে ভরে উঠে,
আমি সার্টের বোতাম লাগিয়ে তা ঢেকে রাখতে চাই
তিনি তবুও কখন যেন খূঁলে ফেলেন,
কিন্তু কে খূঁলে ফেলেন ?
আমি কি তাঁকে যতনে রাখিনি ?
নাই বা পারলাম তাঁকে দুধ কলা খাওয়াতে !
শীতের সময় দামী কম্বলের নিচে শোয়াতে ! 

বের হওয়ার ক’টা কারণ আছে,
স্বাধীনতা মানে তো কোন বন্দির অধ্যায় নয়
যেখানে সবাই বন্দি রবে !
সব ভালোবাসার মরণ হবে !
মা মাটি ও মানুষের মৃত্যু হবে !
তাহলে স্বাধীনতা কি ?
তা তো মেয়েদের সর্ট কার্ট কাপড়ে চলাফেরা নয় !
বুকের ওড়না ঘাড়ে ঝূলানো নয় !
টাকনুর কাপড় হাটুতে তোলা নয় !

স্বাধীনতা মানে ফূল।
ফুলের ধর্ম কখনও অফুল নয়,
তাই স্বাধীনতার মানে পবিত্রতা
নতুন ভাবে বাঁচার চেতনা
যেখানে আঁধারের ভাব নেই
শুধুই আলো আর আলো।
আমি সেই আলো বুকে বেঁধে রাখি ।

                                                                               ০৩-১২-২০১১

কবিওকবিতা

আমি এক কবি, লেখি সবার সবি
ঝরা ফুল জাগাতে ফুলকলি ফোঁটাতে,
গেয়ে যাই গান আমি স্রষ্টার আঙ্গিনাতে
খোঁলে যায় বাতায়ন ভোরের আলোকা রবি । (॥)

প্রেম প্রিতি ধরণীর, আরো কত কাহিনী দেয় ধরা
আলো কালো দেয়ালের প্রতিবিম্ব চেহারা,
সুখদুঃখ পাশে থাকে রয়ে যায় আমরণ
তাহাও কবিতায় ফোঁটে আবেগি মন,
লেখি ছায়া হয় কায়া থামিতে চায় না
কবে শুরু, শেষ হবে স্রষ্টাবিনা জানি না,
বিশ্ব দুয়ার, যাবে কতদূরে , আমার ছিল তাতে এই দাবি (॥)

আলোছায়া মুখরিত যাহা হয় তাও লেখি
আমি কি জানতাম এমন হবো কাব্য আঁকি,
এ বুকে ভয় হয় হারিয়ে ফেলি যদি গান
কি ভাবে থাকবো সঙ্গিহারা স্বপন হবে ম্লান,
যে অবধি থেকে যাই কবিতায় দামিনী
পরাহত করো না ওগো প্রভূ মোর লেখনী,
বিশ্ব দুয়ার, যাবে কতদূরে, আমার ছিল তাতে এই দাবি (॥)

পাই যদি ছুটি, হয় মোর জুটি, ছন্দের ইশারা
খোঁলে দেই ভাবনা ডায়েরিতে কথার ধারা,
কবর মরণ দাফনের কথা লিখে যাই
ধনী গরিব ধনমান কতকাল তাহা জানাই,
উঁচু নিচু খুব কাছে বেধাবেধ অমানুষি রুপ
কবিতায় রাঙ্গি দেই সেই ধারার বহুরুপ
বিশ্ব দুয়ার, যাবে কতদূর, আমার ছিল তাতে এই দাবি (॥)

কবিওকবিতা

অন্য মায়েরা কেমন হয় তা সত্যিকারে আমি জানি না,
আমার মা'কে আমি সবটুকু জানি,
দীর্ঘ আঠারো বছর পেরিয়ে গেছে বাবা বিদেশে ছিলেন,
সংসারে একটু সচ্ছলতার জন্যে তিনি বউ ও
সন্তানদের ভালোবাসাকে তুচ্ছ করে দূরে পড়ে ছিলেন,
এর মাঝে তিন চারবার হয়তো তিন মাস করে ছূটি নিয়ে দেশে
এসেছিলেন, তার সঠিক হিসেব আমার মনে নেই ।
এতোটা বছর পেরিয়ে গেলেও মা কখনো বাবাকে রাগে
কিছু বলেননি যে, আর কতকাল এভাবে থাকবো ?
কখনো মন খারাপ করে খানা দানা বন্ধ করেন নি
অথবা বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার ভয় দেখান নি ।
আমরা শুধু দুই ভাই
মাধ্যমিক পাস করার পর আমি ঢাকায় চলে যাই,
তার তিন বছর পর আমার ছোট ভাইও চলে যায় ।
আর মা বাড়িতে একদম একা থাকতেন
একা কী খান না খান তিনিই জানতেন।
আমি সকালে বিকেলে ফোন করে জানতে চাইতাম,
মা, দুপুরে কী রেধেছিলেন ? রাতে কী খাবেন ?
মা হেসে বলেন, কী খাবো বাজান, যা খাই সবই বদহজম হয়,
পেটের বামপাশে শক্ত হয়ে থাকে, কোমরের ব্যাথাটা আবার বেড়েছে ।
আমি বলি, তাহলে আগামী শুক্রবার দিন টাঙ্গাইল যান !
মা বলেন, গেলেই তো হাজার দুয়েক টাকা লাগবে ।
আমি বলি, টাকার জন্য চিন্তা করবেন না,
অনেক তো করেছেন, এখন আমরা কী কিছূই করব না ?
তুই কবে আসবি বাজান ?
এই তো গত সপ্তাহে না বাড়ি থেকে এলাম ।
ভুলেই গেছি, মনে হয় কতদিন দেখিনা ।
আমার চোখদ্বয় জলে ভরে যায় ।
সত্যিকার ভালোবাসার মানে কিন্তু সব সময় কাছে থাকা নয়,
দূর থেকেও গভীর ভাবে ভালোবাসা যায়,
এমনটা আমি মায়ের মাঝে বাবার প্রতি দেখেছি ।
ক’দিন হল বাবা দেশে এসেছেন, বাবার শরীরটা বিষণ রকম রোগা,
তাছাড়া কিছুদিন আগে বিদেশে থাকা অবস্থায় বাবা হার্ট এটা্ক করেছিলেন।
সৃষ্টিকর্তার কাছে লাখো শুকরিয়া, বাবাকে কাছে পেয়েছি।
আমি মাকে বলেছি বাবা যেন কোন কাজ না করেন,
অনেক করেছেন, এখন বাকি জীবন দোয়া কালাম করে যাক।
২০-০২-২০১২

কবিওকবিতা

আমার ধারনা হয় আমার মা ছোটকালে কারো প্রেমে পড়েছিলেন,
লোকটাকে আমি হালকা চিনি ও জানি ।
নানা বাড়িতে গেলেই ঐ বাড়িতে টিবি দেখতে যেতাম,
লোকটা মা আমার মাথার হাত বুলিয়ে পাশের কারো সাথে বলতেন-
ওতো লুৎফার বড় ছেলে, ওর বাপটা পাগল ।
আমি কোন কথা না বললেও চুপ করে কথাগুলো শুনতাম টিবির দিকে তাঁকিয়ে,
আর কাউকে বসার জন্য কিছু না দিলেও তিনি টুল
অথবা চেয়ার দিয়ে বলতেন, বস নাতি ।
তার প্রায় পাঁচ বছর পর আপন মামার বাড়িতেই টিবি দেখতাম,
একদিন লোকটা বউ মানে মামী আসেন টিবি দেখতে,
মা তখন আমার পাশে খাটে বসে টিবি দেখতে ছিলেন,
আপন মামীকে বললেন, ভাবী ? ঐ লোকটা যেন আর কোন দিন
এই বাড়িতে টিবি দেখতে না আসে ।
 আমি ভেবে পেলাম না এমন কথা বলার কারণ কী ?
তার একটু পরে মা মামীকে আবার বললেন-
ওরা ধোকাবাজ, মিথ্যেবাদি, ওরা আমার সাথে ছলনা করেছে ।
তারপর একদিন নানীকে বললাম-
 মা’র কী আগে কোথাও বিয়ে ঠিক হয়েছিল ?
নানীর না সুচক কথায়ও আমি স্থির হতে পারিনি ।
অনেক খূঁজেছি আরও কিছু তথ্য বের করতে, পারিনি ।
মাকে তো আর সরাসরি বলা যায় না-
মা তুমি কী আগে প্রেমে পড়েছিলে ?
এখনো লোকটার বাড়ির পাশ দিয়ে গেলে লোকটার মা বলেন-
ঐতো আমাদের লূৎফার ছেলে যাচ্ছে,
ছেলেটা লেখাপড়া করে চাকরি করছে ।
আমাদের লূৎফার ছেলে এমন কথা মানে কী ?
মায়ের সাথে ওরা কী ধোকাবাজি, মিথ্যেবাড়ি ও ছলনা করেছেন ?
আমার এই প্রশ্ন জেগে থাকে।
২৪-০২-২০১২

কবিওকবিতা

কূয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে সকালটা,
দুপা ফেলে ঘাসের ওপর দিয়ে হাঁটতে বেড়িয়েছি
গায়ে ছেঁড়া ময়লা ভরা নীল সার্ট,
সার্টের বুকের ছয়টা বোতামের চারটাই নেই।
নীলিমা বলেছিল তার কামিজের দুটো বোতাম আমায় দিবে,
সেই জন্যে তার বাড়িতে আজ আমার এই যাত্রা ।
কিন্তু কেমন যেন মনে হচ্ছে !
এই সকালে শুধু বোতামের জন্য তার কাছে যাওয়া কি ঠিক হচ্ছে !
ওর আবার রাত জেগে টিবি দেখার অভ্যেস ।
গত রাতে কি টিবি দেখেছে ?
আমাকে দেখে বিরক্ত হবে না তো ?
ফিরে যাবো ?
নাহ্‌ থাক ! কিছু বলে বলুক, আপনজনই তো বলবে ।
বাড়ির উত্তর পাশে আমি দাঁড়িয়ে আছি,
কখন তার ঘরের জানালাটা খুঁলবে !
কখন বোতামের জন্য আমায় তার ঘরে ডাকবে !
ও কি তার বিছানায় আমার এই ছেঁড়া কাপড়ে বসতে দিবে ?
আবার ভিক্ষুক ভেবে আমায় দু মুঠো চাল দিয়ে বিদায় করবে না তো ?
তা কি হয় ? বলবো আমি অপু, সার্টের বোতামের জন্য এসেছি।

২৬-১১-২০১১


কবিওকবিতা

কেউ ফুল হাতে আমার পানে এগুই নি,
বলেনি একবারও তোমায় ভালোবাসি।
স্কুলে বেলায় দেখেছি আমার সহপাঠিরা সুন্দুরি মেয়েদের হাত ধরতো,
কখনো তাদের ওড়না ধরতো,
আরও কিছু করতো,
তবুও তারা বাধা দিতো না ।
কিন্তু আমি কিছূ বলতে গেলেই গালাগাল শুনতে হতো,
এমন কি মেয়েরা তাদের পায়ের জুতো খূঁলতে চাইতো ।
আমি বাধ্য হয়ে বলতাম, সরি,
আর অমন হবে না ।
এতো বছর পর সেদিন একজনকে বললাম, পেরেম চাই ।
আমার বুকের কাঁপুনি না থামতেই
দেখি মেয়েটি বত্রিশটা দাঁত বের করে বলছে,
এই মাগির পুত ?
 আমার এই শরীর এক জনের রেজিষ্টিরি করা
তুই নতুন করে আবার করতে চাস ?
আমার ভাগ্যাটই খারাপ,
যাকে কিছু বলি সেই অমন করা থাকে ।
এখন আর কাউকে কিছূ বলি না
কী দরকার আছে বলার !
বলার আগেই তো বউয়ের থে পাচ্ছি
তা ওদের চেয়ে মন্দ তো নয়
বরং পিওরিটি, নিজেই তার সিকিউরিটি
১১-০১-২০১

কবিওকবিতা

আমার ইচ্ছে করে তোমার বুকে
ঘুমিয়ে এক দন্ড সুখ নিতে,
পৃথিবীর কোথাও গিয়ে আমি অমন সুখ পাইনি,
ছোট বেলায় শোনতাম মায়ের বুকেই নাকি শ্রেষ্ট সুখ নিহিত,
তা অবশ্য মিথ্যে নয় ।
মায়ের বুক আর তোমার বুক তো অভিন্ন নয়,
তা থেকে আলাদা আলাদা রঙের চুম্বন বের হয়;
দুটো চুম্বনের সীমানা আলাদা ভাবে অসীম।
ধুলোর সাথে তুমি তো নও, পুস্পকলির সাথে
একই বাঁধনে সেই তো বেঁধেছি,
ভোরের শীত উপেক্ষা করে বকুল ফুলের মালা গেঁথেছি।
কই, তুমি তো আমার জন্য কোন মালাই গাঁথনি।
আজ কোন অভিযোগের পর্ব নয়,
আজ কোন মাতালের মাতলামি কথা দিয়ে
তোমার মন বিষিয়ে তোলতে চাই না,
আজ একান্তই তোমাকে পেতে এসেছি,
বাহু ডোরে জীবনের কাছে জীবনের দামে
এক মুঠো সুখ নিতে এসেছি।
বিশ্বাস করো আর নাই বা করো
জীবনের অনেকটা পথ শেষ হয়ে গেছে
আর তো দুঃখ বইতে পারি না
আর তো বিরহে সময় পার করতে ইচ্ছে হয় না।
২০-০২-২০১২

কবিওকবিতা

আমায় ধরো, অতঃপর দুঃখগুলো নিয়ে যাও
বহুদূরে যেয়ো, যেখানে আমার যাত্রা কাঙ্খিত নয়
আমার কথা সেখানে বলো না ।
মরণের সাথে মিলেছি,
দুঃখটা আর বুকে নিতে চাচ্ছিনা,
এখন কাফনের কাপড় জড়ানোর পালা
কে যেন কবরটাও খুড়ছে !
খুন্তি কোদাল দিয়ে সুনিপূণ ভাবে কাটছে ।
মেঘ, চারদিকে মেঘেরা খেলছে,
এখনি তো বৃষ্টি হবে !
আমার কষ্টগুলো কী ধুয়ে নিয়ে যাবে ?
তাহলে তো ভালোই হতো,
আমি অপু সার্থক ভাবে মরণে যেতাম।


কবিওকবিতা

নীশিতে নীশিত, অতঃপর অন্ধকারের ঘোর,
ছুটে চলেছে কালো কাহিনীর দেশ,
মানুষেরা ঘুমিয়ে পড়েছে,
ঘুমিয়েছে সব  উদ্ভিদ ও প্রাণীকূল পৃথিবীর;
ঘুমাইনি আমি, ঘুমায়নি আমার চোখদ্বয় ।

আমি তখন খুঁজে ফিরি বাতাসের মাঝে তন্ময়,
আবছায়ায় নাগাল পাই এক জোড়া হাতের ।
আমায় দেহে এসে সুর-সুরি দিচ্ছে
আমায় কাতুকতু দিচ্ছে,
এ এক পরম পাওয়ার সুখ, সুখান্তর ।
সব কিছু মিলিয়ে যাচ্ছে তার আলোকিতে
সব কিছু ব্যর্থতায় কেঁদে যাচ্ছে তার দেখায়,
আমি আর সে, আমরা এবং আমরা
চির জীবনের এক অবিচ্ছেদ অংশ,
রক্তের সাথে রক্ত
ঠোঁটের সাথে ঠোঁট
মনের সাথে মন ।

কবিওকবিতানক্ষত্রের আলোছায়া এদিক সেদিক উড়াউড়ি করে,
 এক খন্ড ফালি চাঁদ রাতের ঘোর কাটিয়ে মিষ্টি আলো দেয়,
এক দল মানুষেরা তখন আকাশে তাঁকিয়ে হাসি কান্নার আলাপ করে।

এ এক বিশাল জয়গান, বিশাল প্যান্ডেলের জয়ধ্বর্নি,
চেতনার ভিতরে সুপ্ত অসীমতা,
আলোর আস্তরনে ভর করা মৃদূু বাতায়ন।

সকালে ঘূম ভাঙা দুনিয়ার জমিনে নতুন করে বাঁচার আশা
সন্ধ্যায় অলসতার টানে আবার ঘুমে মজে থাকা প্রহর,
যায় দিন, আসে রাত, এভাবে ফুরাবে বেলা,
এক দিন হবে সবের শেষ, রবে শুধু দাউ দাউ পয়ার।

কবিওকবিতা

প্রেমের কালটা বদলে গেছে,
নিয়মের মাঝেও তার অনেকটা পরিবর্তন,
সুন্দর ও কুৎসিতের মাঝে প্রেমটা নেই বললেই চলে ।
বলা চলে ছিল, কিন্তু চলে না, থাকবে,
সেই মুখ দেখা কালের প্রেমের কাহিনী এখন হাস্যকর,
যাঁরা নাকি ওতেই অনন্ত- সুধা পেতেন,
ভোরে কূয়াশা কেটে সকাল হতো সেই প্রেমের তেজে ।
এখন অর্ধনগ্ন মেয়েরা মন্তব্য করে, অদৃশ্য প্রেম দিয়ে কী মন চলে ?
তারা পছন্দ করে নিয়েছে নগ্নতাই বিনোদন,
নগ্নতাই প্রেমান্তর,
তার মাঝে হালকা ছায়া বৃত্তের নেশার জুয়ারী ।



কবিওকবিতা
এ আর এমন কী জীবন !
যদি ভাবি তা নিয়ে তবে তা অসীম পেরিয়ে যাবে,
আর নয়তো এক খন্ড তুলোর মত বাতাসে উড়ে যাবে ।

হরেক রকম চাহিদায় সেই জীবন ভালো কিংবা মন্দের দিকে যায়,
তখন সে কি জানে না কিছু কথা,
যা অবুঝে রাখলে ভবিষৎ জীবন অন্ধকারে নামবে ।

এর আর এমন কী জীবন !
মানুষ তাকে নিয়ে খেলে আর খেলে,
উহ্‌ ! কী কথা বলব আমি এই ছোট্ট মনে তা নিয়ে ?

আগুন আর আগুন, ওহ্‌ মাই গড !
আমায় বাঁচাও আমাদেরকে বাঁচাও হে প্রভু,
শ্রেষ্ট সেরা জীব হিসেবে এ আমার প্রার্থনা ।

কবিওকবিতা

 বৃষ্টি হচ্ছে ! পৃথিবীর ভিতরে নতুন ধারায় বৃষ্টি ?
ইয়েস ! বৃষ্টি বললে ভূল হবে, বলা যায় ঝড় হচ্ছে,
বৃষ্টি কিংবা ঝড় যাই বলা হোক না কেন
তাতে মাটিতে পড়া নমুনাটা হয় জল, মানে জলের ধারা,
কিন্তু মতিঝিল চত্বরে নমুনাটা ছিল রক্ত,
ইয়েস ! মানুষের রক্ত,
স্রষ্টা যাদেরকে তাঁর সৃষ্টির সেরা জীব আখ্যা দিয়েছেন ।

টুপি পড়ার দল, হাতে মেসওয়াক, গায়ে সাদা পায়জামা পাঞ্জাবি,
বলতে দ্বিধা নেই, ওরা একই মতাদর্শের,
কওমি মাদ্রাসায় ওদের পড়ালেখা চলে,
ফিতরার টাকা, মালের টাকা, দানের টাকায় চলে ওদের দিনাপাত,
ওরা রাজনীতি বুঝেনা, বুঝতে চায় না, চায় আল্লাহর আইন ।
কথিত জাগরণ মঞ্চ শাহবাগে তিন মাস থাকতে পারে,
সেখানে ওরা কি একটা রাতও থাকার অধিকার রাখতে পারে না মতিঝিলে ?

বুঝতে বাদ থাকে না টুপি পড়াদের স্থান আওয়ামী লীগের কোথায়,
পায়ের তলায়? থুঁ থুঁ-তে? চড় থাপড়ে? চোখের লালচে আভায়?
ওপরের কোনটাতেই নয়, আছে তাদের মনের বাহিরে, মানে ঘৃনায়।
দেশে যত নাস্তিক, অমুসলিম, ধর্মহীন আছে তাদের বেশীর ভাগের জায়গাই
কালো বিড়ালের আওয়ামী লীগে,
সাদা বিড়ালের আওয়ামী লীগে,
রঙ ছাড়া বিড়ালের আওয়ামী লীগে ।

কবিওকবিতা

দুঃখ আসে জীবনে, দুঃখ আসে রক্তের বুকে,
মিশে যায় মহাকালের ঘুম-শাখে কাল বৈশাখের মত,
দিয়ে যায় অনন্ত দগ্ধপিনা ।

কাঁদে মানুষ, কাঁদে জীবন', কাঁদে সারাজাহান,
উতালা হয়ে যায় আসমান জমিন,
এলোমেলো হয়ে যায় সকল ফুলের বাগান ।

সূভা হারিয়ে যায় প্রকৃতির বুক থেকে,
জীবন হারিয়ে যায় জীবন থাকার জায়গা থেকে,
রেখে যায় অরাখার হতাশা।

কবিওকবিতা

বাড়িতে যাবো ঈদের ছুটি কাছে এলো সেই শান্তনা
মেঘের মিশে মেঘ হয়েছি বাহির হতে পারলাম না ।

সারাবেলা মেঘের ডাক ঘরের ভিতর সময় পার
কাছের মানুষ অভিমানে বলে মজা হল না এবার ।

 আমি বলি, “কি করব তবে বলো উপায় বউ?”
বউ বলে, “মেঘের ডরে তাই বলে কি বাহির হয় নি কেউ?”

কি করি আর বউয়ের কথায় নতুন জামা পড়ে
বাহির হলাম ভেজা হাওয়ায় বউয়ের হাতটি ধরে । 

ভেজা মাটি ভেজা ঘাস ভেজা গাছের পাতা
তাদের সাথে আমরাও ভিজে হলাম সঙ্গী সেথা ।

এদিক সেদিক তাঁকাই মোরা মনটা বাঁকে চলে
 হঠাৎ করে পা ফসকে পড়ে গেল বউ পিছলে ।

তার সাথে আামিও পড়ে কিছুটা গেলাম আটকে
হাঁসি আমি কাঁদে বউ কাদা আমায় ডাকে।

বউকে বললাম, “এবার বুঝ এই পরিবেশের বের হওয়া
এটাই ভাবো ঈদের মজা গ্রামের বাড়িতে পাওয়া ।”



কবিওকবিতা
 বন্ধুর দোহাই ফিরে আয় মাতার দেশে,
ঘাস ফড়িংয়ের মত উড়ে চলা ভাবটা কী তুই ভুলে গেছিস ?
তোর বাড়ির দক্ষিণ দিকে যে মরা খালটা গিয়েছে,
তাতে আমি ও তুই কত ডুব সাঁতার খেলতাম,
চাচির বারণ আমরা কী শুনতাম ?
তুই নেই, কোথায় হারালি বন্ধু ?
মাঝে মাঝে তোর কথা মনে হলে অস্থির হয়ে যাই,
আমি আমার রক্তের ভিতরে তোকে খুঁজতে থাকি ।

নেই, কোথাও নেই তুই কাছে ও দূরে,
চলে যাই সেই মরা খালের ধারে,
তোর মা, মানে চাচিও আর ডাকে না,
তিনি হয়তো মেনেছেন তুই নেই,
কিন্তু আমি তো মানতে পারি না তুই নেই,
তুই হারিয়ে গেছিস বাতাসের সাথে,
তুই মিশে গেছিস মাটিতে,
তুই ঘুমিয়ে আছিস কবরের ভিতরে একা ।
(সড়ক দুঃঘর্টনায় নিহত বশিরের প্রতি) 

কবিওকবিতা

প্রেম হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, কষ্টেরা কাঁদে;
এ এক বিছিন্নতার কুপকাত নয় কি ?
চাল নেই চুলা নেই, রাজা সেঁজে বসে আসি ।
যতদূর এই চোখ যাচ্ছে,
পরতে পরতে পড়ে আছে আহত প্রাণ,
আহত এই জগৎ সংসার হয়ে ওঠেছে একটা অর্ধ মরণের খেলা ঘর।
সুখের চিন্তা নেই, আছে মনের ভিতর মনের বেদনা,
একটু সুর গাঁথা মিলনের ব্যাথিরতা ।
অবেলার ঢালপালা হাতে নিয়ে ওপারের পথে যাত্রা,
কোথাও কোন মানুষের গন্ধ নেই আমি ছাড়া
ডানে বামে আমি, চারিদিকে আমি
ব্যর্থ মানুষ আমি।

কবিওকবিতা

প্রেমিকের হাত ধরে তোমার বিকেলটা কাটুক,
গোপনের কিংবা প্রকাশে পথের ধারে প্রেমের গল্প করে,
রাত্রীটা যাক সংস্পর্শের বিশাল রন্ধে রন্ধে-
কামের গভীরে বহূতল কূপে,
সকালটা যাক এক গুচ্ছ হাসি মুখের জাগরনে
এক সাথে নাস্তা সাড়া রুটি ভাজিতে। 

অফিসের বেলাটা শুরুর আগে হয়ে যাক দুুজনার মাঝে এক অনন্ত চুঁমো,
যা সারা দিনের তৃপ্ততা ওখানে লেগে থাকবে।
কাজের কাজে সঠিক মনোযোগ,
ফাঁকে ফাঁকে সামনের দেয়ালে ভেসে উঠবে প্রিয়জনের মুখখানি।
একটু বাহিরে গিয়ে এক কাপ চায়ে চুঁমো,
একটা ফোন কল না দিলেই নয়,
কি করছ জান ? অনেক অনেক বেশী মনে পড়ছে,
তুমি বাসায় কখন ফিরছো ?

কবিওকবিতা

আমি সত্যি একটা পাগল, তা না হলে-
অপু চলে গেল অষ্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে,
এতো দিনে সে কি আমায় মনে রেখেছে ?
তার আসার পথ চেয়ে যে এক নারী বসে আছে,
তার কি তা ভাবনায় আছে ?
কই এতো দিনেও একটা লেখা দিতে পারল না !
কখনই কি কিছু লেখার সময় হয় না ?
আমার ভালো লাগে না, কিচ্ছু ভালো লাগে না
মনটা সারাক্ষণ তার কথা ভাবে।

আচ্ছা অপু তুমি কি আমার চেয়ে সুন্দর কারো দেখা পেয়েছো ?
সে কি আমার চেয়ে ভালোবাসে ?
আমার চেয়ে বেশী আদর দেয় ?
এই ঘর এই ঘরের দুয়ার, এ সবের চারপাশ আমার কাছে
কেবলই বিষাদময় হয়ে ওঠছে,
ক্ষণে ক্ষণেই রাগ ওঠে, কথা বলতে ইচ্ছে করে না ।

রাত অনেক হল, কাল সকালেই ইহা পোষ্ট করতে হবে
তুমি দু-দিনেই পেয়ে যাবে,
এবার কিন্তু একটা লম্বা লেখা পাঠাবে, অল্প লেখায় কি আর মন ভরবে আমার ?
আমি সারাদিন সেই লেখা বারেবার পড়ব ।


কবিওকবিতা


বৃষ্টির সাথে খেলায় মেতেছি,
জলের কোলে দেহ হেলিয়ে দিয়ে কিছুটা মাতদোলায়
আমার সর্দি লাগার ভয়টা মায়ের মনে আছে, আমার নেই,
তিনি জানালা বেয়ে আমায় ডাকছেন
আজও সকালে ঔষধ খেয়েছি, ডাক্তারের তুখোড় বারণ বুষ্টিতে না ভেজা;
কে শুনে কার কথা, ব্যাস আমার জল খেলা চলছে ।
রাতে আমার বিষন জ্বর হল,
মা আমার মাথার কাছে বসে আছেন,
বলছেন, কতবার বললাম নামিস নে,
আমি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম মায়ের মুখটার কী ভাব হয়েছে !
মা কাঁদছেন আর চোখ মুছছেন, সাথে আমিও কাঁদছি।



গ্রামের বাড়ি তালতলা মোর ডাকঘর দেওপাড়া
উঁচু নিচু সবই আছে পাহাড় খালে ভরা ।

বর্ষাকালে চারপাশে অথৈ ভরা জল
বনে ঘেরা গ্রামটা মোদের পাহাড় সমতল ।

খাল পেরিয়ে মাঠের পথ, কৃষক ছুটে ক্ষেতে
পথের ধারে দোকানে বসে আড্ডায় থাকি মেতে ।

কেউবা খেলে তাস, কেরাম, কেউবা হাসাহাসি
সবুজ শ্যামল গ্রামটায় মোরা ফিরে ফিরে আসি ।

এই গাঁয়েতে ধনী গরিব উঁচু নিচু আছে
সবাই কাছের, কেউ নয় দূরে, মিলে মিশে বাঁচে ।

একটু দূরে স্কুল মোদের ডাকঘরটা সাথে
ইউ পি অফিস, স্বাস্থ্য সেবা, পরিবার পরিকল্পনা অফিসও তাতে ।

ভিন্ন ধর্মের অনেক মানুষ এই গাঁয়েতে বাস
সবার তরে সবাই মোরা নেই তো দীর্ঘশ্বাস ।

সহজ কথা সহজ মনে বলতে নেই মানা
সুখে দুখে আছি মোরা কারো প্রতি নেই ঘৃনা ।

ঘৃনা করি ঘৃনিত কাজ, মানুষকে তো নয়
খারাপকে তাই বুঝাই মোরা তাই তো মোরা জয় ।

আমরা জয়ি আমরা সেরা নইতো পরাজয়
ধর্য্যে ধরে এগিয়ে চলি পদতলে মাখি ক্ষয় ।

কবি ও কবিতা

অন্ধকারের রাত্রী শেষ, এখন শুধু আলো আর আলো
চারদিকে আলোর কেতন ছড়িয়ে পড়েছে,
এক ফোঁটা রক্তের তুখোড় শামিয়ানা বাংলার আকাশে ভর করেছে,
জেগে ওঠেছে মানুষের মনে বই পড়া ।
মানুষেরা বই পড়বে না ?
কেন পড়বে না? অবশ্যই পড়তে হবে,
আমি পড়তে বাধ্য করব,
 বলেছেন, হুমায়ূন আহাম্মেদ স্যার।

সে যাদুর কাঁঠি নেত্রকোনায় জন্ম নিয়েছেন
সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে সেই বাছাধনের জ্যাতি,
মাত্র পাঁচ পাঁচটা আঙ্গুল দিয়ে সৃষ্টি করছে আকর্ষণ,
মনের তৃপ্তির আকর্ষণ, বই পড়ার আকর্ষণ,
বই মেলায় তরুণ  তরুণিদের মনে উল্লাস জন্ম দিয়েছেন,
কত বড় পাওয়া তিনি পেয়েছেন !
সকল কবি, লেখক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপকরা সম্মান করছেন, 
স্যার বলে ডাকছেন ।

তিনি নেই, না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
 আমার তো হিংসে হয়।
 এমন হিংসে কি আর কারোর জন্য হবে ?
গত, কত গত জন্মেও মনে হয় জন্ম হয়নি তাঁর মত কারোর ।
কি লাভ এই লেখাটুকু লেখে ?
আসল কবি তো চিরন্তন দেশে চলে গেছেন ।
হায় হিমু ! হায় মিশির আলি ! হায় শুভ্র !
তোমরা কোথায় আজ, চলে এসো নুহাশ পল্লীতে,
যিনি তোমাদেরকে নড়িয়েছেন, তাঁকে আজ তোমরা নড়াও,
শেষ বারের মত তাঁর পাঁচ আঙ্গুলের ওপর হাত রাখো ।
হলুদ হিমু ! তুমি এবার না নীল হয়ে যাও !
হলুদ রাখার দায়িত্বশীল ব্যক্তি চলে গেছেন।
আর ফিরবেন না, আর তোমার নামে লেখা বই কেনার জন্য-
কোন পাঠক বই মেলায় ভিড় করবে না ।
টেইলার্সগুলোতে পকেটসহ পাঞ্জাবি অহরহ বানানো হবে,
কিন্তু তোমার পকেটছাড়া হলুদ পাঞ্জাবি কি কোন কারিগর বানানে ?
আমার ভয় হচ্ছে, একটা বই পড়ে শেষ করতে না ক’বার শুরু করতে হয় ।
ভেঙে যাচ্ছে বুক আমার, রক্তক্ষরণ হচ্ছে বাংলার অগণিত পাঠকের বুকে।
নীরব হয়ে গেছে নুহাশ পল্লীর আঙ্গিনা,
থরথর কাঁপছে বাংলার সাহিত্য, নাট্যমঞ্চ, চিত্রজগৎ,
তারা হারিয়ে ফেলেছে তাদেরকে প্রিয় মানুষটাকে । 

কবি ও কবিতা


মদের বোতলে নেশার বাইপাস সড়ক থাকে,
দুই বা একাধিক দিক থেকে আসা সড়কের গাড়িগুলোতে-
ড্রাইবার ও হেল্পারদের হাঁকা হাঁকিতে পরিবেশটা ভালোই লাগে।
সপ্তাহে সপ্তাহে ভাড়ার পরিবর্তন,
তেলেল দাম দশ পয়সা কিঃমিঃ প্রতি বাড়লে
তারা বাড়ায় পাঁচ টাকা থেকে দশ বিশ কিংবা পঞ্চাশ টাকা ।
বড়ই খূশির খবর আর কিছূটা নীরব চাঁদাবাজী,
বাংলা সিনেমাগুলোতে দেখা যায় কিছূটা প্রতিবাধ করতে,
কিন্তু বাস্তবে নেই । যোগাযোগ মন্ত্রি সাফাই গান,
“আমার কাছে কোন অভিযোগ আসে নি, আসলে ব্যবস্থা নেবো”

গাঁঁজার বোতলে মরণের ইশারা ডেকে যায়,
সন্ধ্যার পর শহরের অলিগলিতে দেখা মেলে এমনটা,
কখনো ব্যাস্ততম এলাকায় ।
 পাশেই পুলিশ দাঁড়িয়ে তাঁদের সিকিউরিটি দেন,
দায়িত্ব বলে একটা কথা আছে না ?
শুধুই ভালোর কাছে তারা থাকবে তা কি হয় ?
একটু খারাপ মেশালে মন্দ কি ?

দোলে মানুষ জাতি দোলে মৃত্যু দোলে বাংলাদেশের ভবিষৎ,
আর দুলি আমরা ক’জন কবি,
সিগারেট হাতে টেবিলের উপর দোলে বাংলার সাহিত্য
আর ভুলে যাই নজরুল ও রবীন্দ্রনাথকে ।

sislam8405

{Facebook#https://www.facebook.com}

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

luoman থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget