অন্ধকারের রাত্রী শেষ, এখন শুধু আলো আর আলো
চারদিকে আলোর কেতন ছড়িয়ে পড়েছে,
এক ফোঁটা রক্তের তুখোড় শামিয়ানা বাংলার আকাশে ভর করেছে,
জেগে ওঠেছে মানুষের মনে বই পড়া ।
মানুষেরা বই পড়বে না ?
কেন পড়বে না? অবশ্যই পড়তে হবে,
আমি পড়তে বাধ্য করব,
বলেছেন, হুমায়ূন আহাম্মেদ স্যার।
সে যাদুর কাঁঠি নেত্রকোনায় জন্ম নিয়েছেন
সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে সেই বাছাধনের জ্যাতি,
মাত্র পাঁচ পাঁচটা আঙ্গুল দিয়ে সৃষ্টি করছে আকর্ষণ,
মনের তৃপ্তির আকর্ষণ, বই পড়ার আকর্ষণ,
বই মেলায় তরুণ তরুণিদের মনে উল্লাস জন্ম দিয়েছেন,
কত বড় পাওয়া তিনি পেয়েছেন !
সকল কবি, লেখক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপকরা সম্মান করছেন,
স্যার বলে ডাকছেন ।
তিনি নেই, না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
আমার তো হিংসে হয়।
এমন হিংসে কি আর কারোর জন্য হবে ?
গত, কত গত জন্মেও মনে হয় জন্ম হয়নি তাঁর মত কারোর ।
কি লাভ এই লেখাটুকু লেখে ?
আসল কবি তো চিরন্তন দেশে চলে গেছেন ।
হায় হিমু ! হায় মিশির আলি ! হায় শুভ্র !
তোমরা কোথায় আজ, চলে এসো নুহাশ পল্লীতে,
যিনি তোমাদেরকে নড়িয়েছেন, তাঁকে আজ তোমরা নড়াও,
শেষ বারের মত তাঁর পাঁচ আঙ্গুলের ওপর হাত রাখো ।
হলুদ হিমু ! তুমি এবার না নীল হয়ে যাও !
হলুদ রাখার দায়িত্বশীল ব্যক্তি চলে গেছেন।
আর ফিরবেন না, আর তোমার নামে লেখা বই কেনার জন্য-
কোন পাঠক বই মেলায় ভিড় করবে না ।
টেইলার্সগুলোতে পকেটসহ পাঞ্জাবি অহরহ বানানো হবে,
কিন্তু তোমার পকেটছাড়া হলুদ পাঞ্জাবি কি কোন কারিগর বানানে ?
আমার ভয় হচ্ছে, একটা বই পড়ে শেষ করতে না ক’বার শুরু করতে হয় ।
ভেঙে যাচ্ছে বুক আমার, রক্তক্ষরণ হচ্ছে বাংলার অগণিত পাঠকের বুকে।
নীরব হয়ে গেছে নুহাশ পল্লীর আঙ্গিনা,
থরথর কাঁপছে বাংলার সাহিত্য, নাট্যমঞ্চ, চিত্রজগৎ,
তারা হারিয়ে ফেলেছে তাদেরকে প্রিয় মানুষটাকে ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন