তিন গুন্ডা ও মজু । Tin Gunda O Moju । Three Gangster and Moju । বাংলা গল্প


কবি ও কবিতাএলার্ম দিয়ে রাখা ঘড়িটা বেজে ওঠছে। অবিরাম ভাবে এক মিনিট বাজার পর পাঁচ মিনিট বিরতি দিয়ে আবার শুরু হয়। এভাবেই আধা ঘন্টা ধরে চলছে। রাতের বেলায় ক্ষুদ্র শব্দও অনেক দূর চলে যায়। আর তা যদি হয় জোছনা রাতে তবে তো কথাই নেই। জোছনা ও অন্ধকার রাতে শব্দ আলাদা ভাবে কম  কি বেশী দূরের যাওয়ার কারণ নেই।  যে যেটা পছন্দ করে সে সেটাকেই এগিয়ে রাখবে। লেখকের মনোভাব হয়তো জোছনার প্রতি দূর্বল আছে।  তাই তিনি জোছনাকে প্রধান্য দিচ্ছে।
    যা-ই হোক, আজ জোছনা নেই, অন্ধকারের সাথে সামান্য মেঘের ভাব। এই বৃষ্টি নামছে আবার এই থেসে যাচ্ছে। মজু এই অল্প বৃষ্টির মধ্যেই কাক ভেজার মত হয়ে কাঁপছে। এখনো বাসায় যেতে অনেক পথ পড়ে আছে। শহরই পেরুতে পারেনি, তারপর সেই গ্রাম। বাড়িতে যাওয়ার ভাবনা বাদ দিয়ে আশেপাশেই কোথাও রাতটা পার করার কথা ভাবছে। কিন্তু কে দেবে তাকে এমন ভরসা !
    এই এলাকায় মজুর অনেক যাতায়াত থাকলেও পরিচিত কেউ নেই। তাছাড়া দোকানপাট বন্ধ করে বাসায় চলে গেছে সবাই। যারা জেগে আছে তারা সবাই নাইট গার্ড কিংবা চিরচেনা কুকুরের দলপল।
    রাতের বেলায় সাধারণত ওরা সবাই একত্রে বসে আলাপ করে। গার্ডদের সাথে কুকুরদের ভালো মিল মহাব্বত থাকে। ভয়ের সময় যখন চিৎকার করার সুযোগ থাকে না তখন ওই কুকুরগুলোই ঘেউ ঘেউ করে লোকজনকে জাগাতে সাহায্য করে। চোর কিংবা ডাকাতদের পরিকল্পনা বিফলে যায়।
    মজু এদিক সেদিক তাঁকিয়ে কোন মানুষের দেখা না পেয়ে কিছুটা ভয়ে পেলো। ব্যাগের পকেটে থাকা একটা কলা বের করে খেতে খেতে মূল পথের দিয়ে এগিয়ে যায়। একটা ছোট আলো দেখা যাচ্ছে, পাশেই কয়েকজন গল্প করছে। মজু পকেটে থাকা ক’টা টাকা পায়ের সু-য়ের মোজার ভিতরে রেখে মাথার চুল চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে গিয়ে বলল, এই যে ভাই,  আমি খুব বিপদে পড়েছি। একটু সাহায্য করতে পারেন ?
    দূর থেকে অনেক লোকের আলাপচারিতার ভাব দেখা গেলেও আসলে ততজন নয়। দু্‌জন লোকের একজন ইয়া মোটা কালো ও খাটো, পরের জনও কালো তবে কঙ্কাল। সুট টাই পড়া দেখে ওরা দুজন বলল, তা মাল পানি আছে নাকি? কিছূ ফালান, তয় ভাইবা দেখার পামু কি করা যায়।
    মাল পানি কি মজু বুঝতে না পেয়ে আবার জানতে চায়, আমার কাছে কোন পানি নেই, একটু ছিল কলা খাওয়ার পর খেয়েছি।
    লোক দুটো শোয়া থেকে ওঠে তাদের নিজেদের মাঝে কথা বলে, আজকের ইনকাম মনে হয় বালা অইবো। মজুর দিকে তাঁকিয়ে  বলে, বাড়ি কেলা, কই যাইতান ?
    এমন খাপ ছাড়া আঞ্চলিক ভাষা মজু বুঝতে না পেয়ে অবিরাম মাথা নাড়তে থাকে। এমন বিপদের সময় কোন কিছুতে না বলতে নেই। মোটা লোকটা উঠে মজুর দাঁড়িয়ে থাকার চারপাশে একটা চক্কর দেয়। সাথে থাকা লাঁঠি দিযে মজুর ব্যাগে খোঁচা দেয়। বলে, ব্যাগে কি আছে ? চিকন লোকটাও একই ভাবে চক্কর দেয়। মোটা লোকটাকে সন্ত্রাসী ধরনের মনে হলেও চিকনটাকে মনে হয়না। হয়তো নতুন এসেছে, শেখার চেষ্টা করছে।
    ফিল্মে একটা নায়িকাকে ঘিরে যেমন গুন্ডারা চারদিকে চক্কর দেয় তেমন করছে। মজু বুঝতে পারল, কিছু একটা হবে। ব্যাগে কিছু নেই কিন্তু' সমস্যা হল কিছুই না পেয়ে যদি ছোরা টোরা দিয়ে আঘাত করে ! তখন তো মুখ থেকে সত্য কথা বের হয়ে আসবে। ওই ক'টা টাকার জন্যে তো একটা প্রেমিক জীবন মরে যেতে পারেনা।
    সকল ভয় ফেলে মজু বলল, কি ব্যাপার বলুন তো এমন পাগলের মত ঘুরছেন কেন ? বলুন, আমায় কোন সাহায্য করতে পারবেন কিনা ? ওইতো সামনে আরেকটা আলো দেখা যাচ্ছে নয় তো ওদিকে যাবো।
    মোটা লোকটার চোখের চাহনি ভালো মনে হলো না। মজুকে রেখে সে একটু ভিতরে গেল। মজু পরের জনের কাছে জানতে চায়, টেনিং- এর মেয়াদ কয় দিন হল ? ভালো ভাবে সব কিছু পরখ করো, যখন একা মূল কাজে নেমে পড়বে ভালোভাবে না শিখলে বসের ছোরার ধাক্কা খাবে।
    চিকন লোকটা দাঁড়িয়ে ভাবছে, এ দেখি গুরুর চেয়ে বড় গুরু। আর দেরি না করে সেও ভিতর চলে যায়। একটু পরে দুজনেই একটা চেয়ার নিয়ে এসে মজুকে বসতে দিয়ে বলে, বস আপনার কাজ কোন এলাকায় ? কাশেম ভাইকে চেনেন ? ক’দিন আগেই তিনি বলেছিলেন নতুন বস আসার কথা। আপনি, মনে হয় সেই লোক। বস ভুল হয়ে গেছে, ক্ষমা করে দিন। আপনাকে এক্ষুণি থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
    মজু হাসবে না কাঁদবে ভেবে পাচ্ছে না। কি বললাম আর কি হল ! সবলের সাথে কখনো দূর্বল ভাব দেখাতে নেই, সবলরা নয়তো দূর্বলকে আরও দূর্বল মনে করে আঘাত করবে ।
    মজুর ক্ষুধা পেয়েছে, বলল, সুটকি মাছের ঝোল দিয়ে ভাত হবে ?
    বস মাফ করেন, এমন পঁচা মাছের ঝোল আপনি খাবেন তা মানায় না, বোয়াল মাছের ঝোল রাঁধা আছে। আজই কাশেম ভাই পাঠিয়েছে, মনে হয় আপনারই জন্যে।
    মজুর জন্য থাকার ব্যবস্থা হল। ভাবছে, কোন ভাবে যদি ওরা জানতে পারে আমি কিছূই না তবে মাগার কাল্লা থাকবে না। শুয়ে শুয়ে মজু অনেক কিছুই ভাবছে। এখন রাত দুইটার কাছাকাছি, আর ঘন্টা দুই পরেই ফজরের আযান হবে, তার আগেই বিদায় হতে হবে। আসলজন এসে গেলে আমাকে কেউ বাঁচাতে পারবেনা। বাহিরে ওদের দুজনের সাথে আর ক'জন মিলে পাঁচ ছয়জন হয়েছে। নিজেদের মাঝে আলাপ হচ্ছে, আজ অন্য সব কাজ বাদ, বসের সেবা করতে হবে। সেবার কমতির খবর ছোট বস জানলে মরার পর লাশ কবরেরও যাবেনা।
    মজু ভাবছে, প্রথমে কোন ভরসা না পাওয়াই ছিল শূভ, এখন পেয়েও মহা সমস্যা। বুকের ভিতরে কাঁপা কাঁপা ভাব। বিভিন্ন বুদ্ধির ভীড়ে আসল যে বুদ্ধিটা এখান থেকে মুক্ত হওয়া পথ বের করবে তা ধরা দিচ্ছে না। নিজের মাথায় দুটো মৃধূ থাপ্পড় দিলেও কাজ হচ্ছেনা। মজুর বুদ্ধির সবই সমানতরাল, মানে যখন সমস্যায় পড়বে তখন খুলে যাবে বুদ্ধির কারখানা।
    মজু বাথরুমে ঢুকে বেশী করে পানি দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নিল। মরার আগে আর হয়তো পানি পাওয়া যাবেনা। টেবিলে রাখা স্নো পাউডার মুখে ও মাথায় তেল মেখে নিল। পকেট থেকে বের করা ছোট আয়নার মাঝে নিজের চেহেরাটা শেষবারের মত দেখে নিল। পায়ের মোজায় রাখা টাকাটা বের করে বুক পকেটে রাখল, যাতে মরার পর কেউ ওগুলো নিয়ে খরচ করতে পারে।
    মজু এখন ফন্দি করছে, কীভাবে বের হবে। কোন পদ্দতিতে সফল হওয়া যাবে ! হঠাৎ করেই বলল, এই তোরাব কই গেলি ?
    চিকন লোকটা দ্রত এসে বলল, আমি তমিজ, কি করতে হবে বলুন বস ?
    যাক- বাবা নাম তাহলে জানা গেল, প্রথমেই সফল। শোন আমি এসেছি সবার কাজ স্বচক্ষে গোপনে দেখার জন্য, ঘূমানোর জন্যে নয়। বুঝলি ? তাই আমি এখন বের হবো। তোরা এখানেই থাক, চালাকি করে আবার কাছের কাউকে আমি আসছি বলিস না।
    তমিজের পা ষাট কিঃমিঃ বেগে কাঁপছে। হয়তো ভয়ে ও পড়েই যাবে। তার আগেই সরতে হবে, ভাবছে মজু।
    কিছূ দূর যাওয়ার পরই তার মত একজন লোককে মজু সামনে পেলো। কাঁধে ব্যাগ ঝুলানো। মুখটা শুকিয়ে গেছে। জানতে চাইল মজুর কাছে, কোথায় যাবেনা ভাই ?
    অপরিচিত লোকদের কাছে রাতের বেলায় দূরে যাবো, বিপদে পড়েছি এমন কথা বলতে নেই। তবুও মজু বলল, চলেন একটু ওদিকে গিয়ে বসি। আমি আর আপনি হয়তো একই বিপদে পড়েছি। কোন দিকে যাবেন ? দেখি উভয়ে উভয়কে কোন সহযোগিতা করতে পারি কিনা?
    না, আমি অবশ্য খুব বিপদে নেই, হয়তো আমার লোকেরা কাছেই আছে। ফটিক ও তমিজ।
    তমিজের নাম শুনেই মজু বসা থেকে ওঠে দাঁড়ালো। মনে ভয় লেগে গেল। ভাবছে, তমিজরা যে বসের আশায় আমাকে এতো আদর যত্ন করল উনি মনে হয় তিনি। কোন রকম ছুঁতো দিয়ে অন্য দিকে থাকতে পারে এমন দিশা দিয়ে লোকটাকে যেতে বলল।
    মজু পেছনে আর না তাঁকিয়ে পথ ধরে যাইতেছে। ড্রিম লাইটের আলোতে চলতে কোন ভয়ই হচ্ছে না। একটু পর পরই একটা করে দুর পাল্লার গাড়ি দ্রত চলে যাচ্ছে। আর কুকুদের ঘেউ ঘেউ তো নতুন কিছু নয়। এখন ভয় অনেকটা নেই, তবুও...। হাত তুলে মজু দূর পাল্লার গাড়িকে থামাতে চেষ্টা করছে। সব চেষ্টাই বৃথা। এক কিঃমিঃ হাঁটার পর একটু করে পেছনে তাঁকায়, ভয়টা একদম কাটেনি। পেছন থেকে কোন গাড়ির লাইট দেখলেই একটু আড়ালে গিয়ে দাঁড়ায়, বলা যায় না শালারা যদি এসে...। বসকে পেয়ে যুক্তি করে না আবার মারতে আসে মজুকে।
    এতোক্ষণে যে ওদের মাঝে তাকে নিয়ে আলাপ শুরু হয়ে গেছে তা মজু নিশ্চিত ভাবে বুঝে গেছে। এখন মজুকে ওরা পেলে কচু কাটার মত খন্ড খন্ড করবে। প্রায় দশটা গাড়ি দেখে মজু আড়ালে গিয়ে পালিয়েছিল। না, ওরা জানলেও আর আমাকে খূঁজতে আসবেনা। আকাশে মেঘ নেই, এই সময়ে পথের মধ্য দিয়ে আকাশে তাঁকিয়ে গান গেয়ে হাঁটার মজাই আলাদা। সাথে যদি কোন বন্ধু থাকে তাহলে তো সর্বত্তম।
    মজু ভাবছে, স্রষ্টার ইচ্ছায় যদি বাড়ি যেতে পারি তবে কালই ওদের কৃর্তী কলাপের কথা পুলিশকে জানাবো। র‌্যাবের কাছে খূঁলে বলব। ভালো সেজে ভন্ডামি কাজ তখন বেরে হয়ে যাবে।
    পেছন থেকে একটা বাইক হর্ন বাজিয়ে আসছে। মজু মাঝ পথ থেকে হাঁটা বাদ দিয়ে সাইট হল। বাইকটা আর এগুলো না। মজুর সামনে গিয়ে থামল। মজু বাইকের লাইটের কারণে কিছু দেখতে পেলো না। তমিজসহ সেই মোটা লোকটা নেমে সালাম দিয়ে মজুকে বলল, বস, দেখতে এলাম কোন কোন দিকে আপনি খোঁজ খবর নিতেছেন।
    মজুর গলা শুকিয়ে গেছে। পা কাঁপছে। এবার বুঝি আর রক্ষ্যে নেই। মাথা না ঘুরিয়ে চোখদ্বয় চারদিকে হালকা পোচ দিয়ে দেখল বাঁচার কোন পথ আছে কিনা। ডান দিকে লম্বা একটা খাল চলে গেছে। খালে পানি আছে। বাম দিকে কিছূ জোপ জঙ্গলের মত দেখা যায়। সামনে পেছনে মূল সড়ক। এই যখন অবস্থা তখনই কিছুক্ষণ আগে দেখা লোকটি বাইক থেকে নেমে এলো লম্বা একটা দা হাতে নিয়ে। 
    মজুর আত্মা যেন আর বুকে নেই। তিন দিকে তারা আর মধ্যে মজু। একজন ছাড়া বাকি দুজনেই মজুর চেয়ে শক্তিশালি হবে। বিপদের সময় মজুর মাথা থেকে হঠাৎ করেই বুদ্ধি বের হয়। এখন বের হবে কিনা তা ভাবছে। লোক তিনজন প্রশ্ন করে যাচ্ছে। মজু কোন জবাব দিচ্ছে না। তিনজনের হাতে দা ছাড়াও আরও কিছু থাকতে পারে।
    মজু নিজের প্যান্টের চেইন খুলে বলল, সরে দাঁড়ান একটু পেচ্ছাব করতে দিন। মরার আগে আসামী যা বলে তা শোনা উচিত।
    কীসের পেচ্ছার করা মজুর ! এক ফন্দি মাত্র। দ্রুত প্যান্ট ও সার্ট খূলে ব্যাগে ভরল। জুতা পড়ে দৌড়ানো যায় না। তাছাড়া টাকা তো মোজার ভিতরে আছে। মজু বসের কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল, মরার পর অনেক সময় শুয়ে থাকতে হবে, ব্যায়াম করা যাবেনা। স্লিম বডিটা থুলথুলে হয়ে যাবো। তাই আজ একটু দৌড়িয়ে লই। আপনার যা দেহ ব্যয়াম না করলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। ডায়বেটিক হতে পারে।
    তিনজনই ভাবল কথাটা মন্দ নয়। সবার আগে বসকে দিয়ে সিরিয়ালই মজু সবার শেষের আগে দাঁঁড়িয়ে সবাই দৌড়াতে থাকে। এক কিঃমিঃ যাওয়ার পর মজু পেছন থেকে চিকন মানুষটার গলায় ধরে শ্বাস নালিটা ভেঙে ফেলে ধাক্কা দিয়ে খালে ফেলে দেয়। একটুপর সামনেরজন বলে তমিজ গেল কই?
    মজু বলে আমরা যেতে থাকি, ও পেচ্ছাব করে আসছে।
    পরের দুটোই মোটা। যা-ই হোক। জায়গা মত ধরতে পারলেই কয়েক সেকেন্ডেই অর্ধমরা কিংবা মারা যাবে।  কোন দিন কাউকে একটা ঘুসিও মজু কাউকে দেয়নি। সেখানে একটা আস্ত মানুষকে মেরে ফেলল ! শরীরে ঘামের মধ্যেও সাহসের একটা জোস সৃষ্টি হচ্ছে মজুর। প্রয়োজনে অনেক কিছুই করতে হয়। যা করার তারাতাড়ি করতে হবে, এমন ভেবে মজু সামনের লোকটাকে নিজের পা দিয়ে একটু আটকে দেয়। ধপাস করে পড়ে যায়। বস পেছনে না তাঁকিয়ে চলছে। ও বাবা গো বলার আগেই একই ধারায় গলা চেপে ধরে মজু। ডান পায়ের গোড়া দিয়ে শ্বাস নালিতে দুটো লাথি দেয়।
    দুটো শেষ। এখন যদি বস সব জেনেও যায় কোন সমস্যা করতে পারবে না। পেছন থেকে কোন আনা-গোনা না পাওয়ায় বস পেছনে তাঁকায়। মজু বলে ওদের দুজনেরই হাগুর টান পড়েছে, আসেন আমরা আবার দাঁড়িয়ে থাকবো কেন?
    ওসবের টান নেই আমার, তোর থাকলে সেরে ল।
    আমার ভয় করে, চলেন না একটু, কাছেই দাঁড়িয়ে থাকবেন।
    বস নিজের নাক  চেপে ধরেও আগাম গুয়ের গন্ধ পেলেন। মরার আগে আসামীর আবদার শুনতে হয়,তা বুঝে বললেন, ঠিক আছে চলেন।
    মজুর ছোরা কিংবা বন্দুক চালানোর অভ্যেস না থাকলেও বাংলার বাঁশ চালানোর অভ্যেস আছে। বসার আগে পাশের কোথাও থেকে একটা বাঁশ জোগার করে।
    বস বলে ও দিয়ে কী হবে ?
    শৃগালের ভয় আছে না? আপনি কি ভয় পান ওকে? আর কথা নয়, আপনি দাঁড়ান, তারাতারি বসে পড়ি নয়তো কাপড় নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। পানি ? সমস্যা হয়ে গেল যে বস, আপনি একটু ব্যবস্থা করেন না।
    কীসের হাগুর টান? সবই মজুর চালাকি, ইচ্ছে করলে মজু এখন পালাতে পারে কিন্তু তা করবে না। শালার বসের বাচ্চা বসকে পোন্দানি না দিয়ে যাওয়া নয়। বস একটা সিগারেট ধরিয়ে সুখ টান দিচ্ছে। মজু সে প্যান্ট অর্ধেক খোঁলা অবস্থায়ই পেছন থেকে বাঁশ দিয়ে আঘাত করে সকল দুই নাম্বারি শেষ করে দিল।

    চোখের ঝিম ঝিম ভাব দুহাতে ঘসে মজু বিছানার ওপর বসে থাকে। এলার্মের ঘড়িটা বন্ধ করে, ঘরের চালের দিকে তাঁকিয়ে ভাবে, এ আমি স্বপ্নে কি করলাম ! তিন তিনটা মানুষকে আস্ত খতম করলাম। ভয়ে মজুর গায়ের পশম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। নিজের হাতের দিতে নজর ফেলে বলছে, এই হাতদ্বয় ! তোরা মানুষ হয়ে মানুষকে মারতে পারলি !   
    ইতিমধ্যে চারদিকে কোলাহল বাড়তে থাকে। ফজরের আযান দিতে আর বেশী দেরি নেই। মজু ওজু করে মসজিদে গিয়ে নামাজর পড়ে স্রষ্টার কাছে ক্ষমার জন্য কাঁদতে থাকে।
                            সমাপ্ত    
                               ০৩-০৮-২০১২
         

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger]

sislam8405

{Facebook#https://www.facebook.com}

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

luoman থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget