আগস্ট 2016


সপ্তম আসমান থেকে আমার মা নেমে আসবেন,
আমি খালি পায়ে দাঁড়িয়ে আছি,
জুতা পায়ে দিলে তাঁর অসম্মান হবে ভেবে-
তা ব্যাগে ভরে রেখেছি,
কনকনে শীতে আমি কাঁপছি,
আমার সারা শরীরের পশমের গোড়া কাঁপছে
তবুও মায়ের দিকে তাঁকিয়ে আছে।
পৃথিবীটা কিছুক্ষণ আগেও কালচে ছিল
এখন ক্‌্রমেই আলোকিত মনে হচ্ছে।
আমার বুঝতে আর বাদ নেই যে-
মায়ের আঁচলের ছায়া দুনিয়ায় লেগে গেছে।
আচ্ছা ! মা কি আমায় চিনবেন ?
মায়ের শরীরে দামি কাপড় থাকবে
সুগন্ধে দুনিয়াটা ভরে যাবে
এই জীর্ণ সন্তানের কথা কি তাঁর মনে আছে ?
কিংবা তাঁকিয়ে আমায় খুঁজবেন ?
মই ছাড়া মা নামবেন কেমনে ?
কত বড় উঁচু আসমান !
অত বড় বাঁশও তো আমার চোখে কোথাও পড়ে নি
নয়তো মই বানিয়ে মায়ের জন্য নিয়ে আসতাম।
সামান্য গাছ থেকে পড়ে গেলেই হাত পা ভেঙে যায়
আর সেখানে আসমান থেকে পড়বে !
তাহলে তো মা নিশ্চিত মারা যাবে !
আমার মা মরতে পারে না,
আমি আমার ছেঁড়া সার্ট পেতে দিব
সার্টটা ছেঁড়া হলে কী হবে !
অনেক শক্ত কিন' আরামদায়ক।
পরের বাড়িতে কাথা সেলাই করে পাওয়া-
 টাকা দিয়ে মা আমায় কিনে দিয়েছিলেন।
এখনো গায়ে জড়িয়ে রাখি।
বউ বলে, তোমার ম্যা ম্যা শুনতে আর ভালো লাগে না,
তখন মনে চায় বউয়ের কাল্লাটা কেটে ফেলি !
 কত বড় সাহস, আমার মাকে করে গালাগাল !
তোর মত বউয়ের গুষ্টি কিলাই,
বউ হারালে বউ পাবো,
মা কী পাবো ?
 পাবো না।
এই তো দুনিয়াটা আরও আলোকিত হয়ে গেছে।
 মা মনে হয় পা এগিয়ে  দিয়েছেন !
 যাই, মায়ের মুখটা আমাকেই প্রথমে দেখতে হবে।
বউয়ের ঝগড়াটে মুখ দেখতে দেখতে-
জীবনটা ছন্নছাড়া হয়ে গেছে।
মা, মা, মা... আমি তোমার অপু,
তোমার গর্ভাশয়ে ছিলাম, তার আকার ছিল-
তিন ইঞ্চি লম্বা দুই ইঞ্চি চওড়া ও এক ইঞ্চি পুরুত্ব।
                                                                                  

          কবি ও লেখক
                সাইফুল ইসলাম
১১-০১-২০১২ (রাত ০৩-৩০)


আমি কাপড় গায়ে জড়িয়ে শুয়ে আছি
আকাশে মেঘের গণঘটা, ক্ষণে ক্ষণে বিদুৎ চমকাচ্ছে
চারপাশে অন্ধকার, কোথাও কোন মানুষের সুর নেই
যতদূর ভাবনা করছি, সবই তার ভয়ে ভরা
ভাবছি, বর্ষাকালে এমন মেঘালয় হয়েই থাকে
কিন' আজকের মেঘালয়টা মেঘে ভরা আকাশ নয়
ছয় দেয়ালে মাঝে কাপুনি হচ্ছে
আমি জানালা খুঁজে পাচ্ছি না।
গায়ের কাপড় ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে
কাকে ডাকবো ! কেউ কাছে নেই,
 ডাকলেও কেউ আসছে না।
বুঝতে পারলাম আমার পা বেয়ে বেয়ে ক’টা পিঁপড়া উঠছে
পিঁপড়াগুলো নাকের ভিতরে যাচ্ছে।
আমি হাত দিয়ে সরাতে চেষ্টা করছি, পারছি না।
আমার হাত কোথায়  গেল ! কিছুক্ষণ আগেও তো দেখলাম
এ কি ! পা আবার কোথায় গেল !
আমি পিঁপড়ার চিন্তা বাদ দিয়ে হাত ও পা নিয়ে ভাবনায় পড়ে গেলাম।
এখন কী দিয়ে কাজ করব !
যাই একটু ওঠে বসি, শরীরটা ম্যাজ ম্যাজ করছে।
এ কি ! কাপড় দিয়ে আমার মাথা ও পা কে বেঁধে দিল !
এখন কী করি, এক হাত দিয়ে কী খোলা সম্ভব !
অনেক কষ্টে খুঁলতেই দেখি ইয়া বড় অনেকগুলো সাপ হা করে আছে,
আমি ভয়ে মাকে ডাকছি, মা মা মা ?
মা নেই। আমার মা ডাক আমার কাছেই ফিরে আসছে।


                 সাইফুল ইসলাম
                ঘাটাইল, টাঙ্গাইল
                ০১৭১৫-৭৯৩৫৭০


আমি যখন প্রেমের কবিতা লেখতে শুরু করি
তখন আমার দেহের রক্ত নালিগুলো চুপ হয়ে থাকে
দেখতে থাকে কোথা থেকে ভাবনা বের হয়
কোথা থেকে শুরুটা করা হয়
নালিগুলো কাজ বন্ধ হলে কী শরীর সুস্থ্য
থাকবে ? থাকবে না।
তাই ওদের কাজ চালিয়ে যেতে হয়।
ভাবনার উৎস আর খূঁজে পাওয়া হয় না।
আমি বুঝতে পারি, আমার মনের দরজা খূঁলে যাচ্ছে,
শরীরের পশমের গোড়া থেকে গরম বাতাস বের হচ্ছে
দখিনের জানালা বেয়ে হরের রকম ইশারা আসছে।
কী ধরনের কবিতা হবে ?
সহজ সরল ভাষার অলঙ্কারে নাকি কিছুটা গুরুগম্ভির ভাবের ?
কথাগুলো নারীর প্রেমের নাকি অন্য কিছু ?
ভাষাটা কী সাধু না চলিত হবে ?
আমি কিছূই জানি না।
শুধূ জানি একটা কিছূ রচনা হবে।
কাগজ কলম অথবা কমপিউটারের কী-বোর্ড প্রস্তুত হচ্ছে।
আমি চেয়ে আছি প্রথমের কথাটা দেখতে।

২২-০২-২০১২


   কবি ও লেখক
                সাইফুল ইসলাম
                ঘাটাইল, টাঙ্গাইল
           

kobitardokan

কবিতা হবে এমন-
যা মাটি ও মানুষের কথা বলে
মায়ের কথা বলে
ঘুমিয়ে থাকা রক্তের মাঝে জাগরণ ধরায়
রণভূমে একটা জাতির মনে চেতনা পাঠায়।
কবিতা হবে এমন-
যেন বাংলার বুক থেকে মুছে যাবে কালো কাল
থেমে যাবে সন্ত্রান খুন রাহাজারি লুট ধর্ষন
পুড়ে যাবে পরাহত কাল,
আসবে আশার আশে স্বর্নালী  শ্যামা।
কবিতা হবে এমন-
যা ভেতর থেকে আগুনের ফুলকি বের হবে
দুহাতে তুলে নেবে দামিনী তরঙ্গ
ছুটে চলে চারপাশে দূর্বার তেজে
বলে যায়, আমরাই শ্রেষ্ট জাতি।
কবিতা হবে এমন-
যেন মায়ের মুখ তুমি দুর থেকেও দেখছো
বাপের মুখে বাজান ডাক শুনছো
 বোন বলছে ভাইয়া, এবার কিন্তু সুন্দর একটা ভাবি আনা চাই
লাল টুকটুকে ভাবি, সে আর আমি খেলবো।
কবিতা হবে এমন-
মহা প্রলয়শিখা, হিমাদ্রী, হুঙ্কার তেজী
হিম্মতের দড়িয়া পাল
আর কবি নজরুলের মত এক জোড়া বাহু,
এক জোড়া চোখ, একটা দেহ মন।

                    ২৮-০১-২০১২
কবি ও লেখক
                সাইফুল ইসলাম
                ঘাটাইল, টাঙ্গাইল
           


যুবতি ছিলাম, হলাম বুড়ি, রক্ত মাংস শুকিয়ে গেল
ধনি বাপের মেয়ে আমার গরিব ঘরে বিয়ে হল,
বাপের কথায় করিনি মানা বিয়েটা হয়ে গেল
আগে হয়নি স্বামীকে দেখা, বাসর ঘরে হল,
নীরবে কাঁদি বুকটা ভাসাই আমার কপাল গেল
ভালোবাসতে চায় না মন স্বপ্ন বিফল হল,
মুখটাতে নেই একটু মায়া মাঝের দাঁত ফাঁকা
গায়ের চামরা কুৎসিত নয় তবুও যে কালোয় মাখা ।
নিজের কপাল থাপড়াই আমি স্বামীর অগোচরে
কীসের বিয়ে হল আমার এ কোন স্বামীর তরে
সময় চলে সময় আসে কোল জুড়ে এলো সন্তান 
সুখ তো নয় সুখের অসুখ দুঃখে ভরে প্রাণ
ভাবলাম আমি যা হয়েছে সবই মেনে নিলাম
স্বামীর ভাবটা হয় না ভালো পরকীয়া যে পেলাম
সব সহ্য করব আমি করব না পরকীয়া
আমি তো আর কম নই অবহেলার ছায়া ?
স্বামীর ঘর ফেলে যাবো চলে বাপের বাড়ি ?
কালুকে হায় দেখবে কে আমার প্রাণের ঘুড়ি  ?
যাচ্ছি ফেলে স্বামীর ঘর কারণ আমি জানি
কালোর স্বামীর মনটাও কালো ভালো হয়নি।

কিছুদিন পর জানতে পারি স্বামী করছে বিয়ে
আমার বাপও গেছেন মারা আমার দুঃখ নিয়ে
ভাইয়েরা আমার বিয়ে নিয়ে আর তো ভাবেনা
মা ও আমি ভেবে কোন কুল কিনারা পাই না
হঠাৎ করে মা’ও গেলেন বাপের মত চলে
স্বপ্ন আশা নিপাত হল দুঃখ আঁচলে।

একদিন শুনি কালুর অসুখ বুকটা উঠে চমকে
যাবো কি না ভাবছি তাই দেখতে কালুকে
শরম ফেলে গেলাম বাড়ি স্বামী নেই বাড়ি
আমায় দেখে সতীন ভাবে দুঃখে মরি মরি
আমি বলি ভয় পেয়ো না থাকতে আসিনি
প্রাণের পরাণ দেখতে এলাম ভুলতে পারিনি
কেমন আছো ওগো বোন, এই কালুকে দেখো
আর তো নেই আমার কেউ আগলে বুকে রেখো।

তার কিছূদিন পরে শুনি কালু গেছে মারা
তিন ভুবনে সবই হারা আমি পাগল পারা
বয়স বাড়ে চামরা ঢিলে রক্ত মাংস টলে
বিয়ের বয়স আরও আছে কেউ না আমায় বলে
নিজের ভূলে স্বামী ছাড়া আমি অহংকারী
স্বামীর ভুল একটু ছিল, ক্ষমা না করি
বয়স এখন আমার আশি, যৌবন টলে হল বাসি
বৃষ্টির কাছে জল চাই থুঁ থুূ নিয়ে আসি
কালুর মা আমি কী ? কেউ না মুখে বলে
আমি জানি এখনো পেটে কালু কথা বলে।


২২-০২-২০১২



কবি ও লেখক
সাইফুল ইসলাম
ঘাটাইল, টাঙ্গাইল



হুজুর ! আপনাদের এখন আর আসতে হতো না-
যদি সাতচল্লিশ সালেই সব শেষ করে দিতেন।
অনেক বড় ভুলটা তখনি করেছেন।
তখন যদি ভাষা শহীদদের মত ঐ ধরনের সবাইকে মেরে ফেলতেন,
তাহলে এখন আর যুদ্ধ করতে আসতে হতো না।
ভাষার সাথে দেশও দখল করতে পারতেন।
শালার শুয়রের বাচ্চা বাঙালিরা খুবই চালাক,
ওরা হয়তো আগেই যুক্তি করেছিল যে-
হাতে গুনা ক’জন মরলেই ভাষা পেয়ে যাবো।
তাই পেলো।
সেই উদ্দিপনা ওদের বেঁচে যাওয়া লোকদের মনে আরও সাহস যুগিয়েছে।
আমরা বন্দুক দিয়ে ওদেরকে মারতেও পারছি না,
অথচ ওরা গজারি গাছের ঢাল দিয়ে আমাদের পোন্দানি দিচ্ছে।
হুজুর ঘুমিয়ে গেলেন ?
জেগে থাকার ব্যবস্থা করে দেই ?
এই কই গেলি মজিদ ?
জি নাসির ভাই, আমি এখানে !
তাড়াতাড়ি ভালো ফূলের ব্যবস্থা কর,
হুজুরের শরীরটা ভালো না, ব্যাথা করছে, ভালো দেখে ফূল চাই।
 নাসির ভাই ! সকিনার মেয়েটা মন্দ না !
আনবো ? সরিফকে খবর দিবো ?
যা করার তাড়াতাড়ি কর,
হুজুর যদি আরও বেশী খারাপ হয় পরে এনে লাভ কি ?
কালু কোথায় ?
এই তোর আমি, কি করতে হবে ?
কাসেমকে খবর দেও।
কছিম নাকি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে দল গঠন করছে ?
ওদের অস্ত্র গজারি গাছ, সেই ঢালগুলো সরাতে পারলেই ওরা পঙ্গু,
এবার শুয়রের বাচ্চারা যাবি কোথায় !
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ দেখিয়ে দিব,
বাংলার মাটি পাছায় ঢুকিয়ে দিবো। ,
এই হারামি বাচ্চারা ! আমার ঘূমে সমস্যা করছিস কেন ?
তোরা না বললি, ফুল এনে দিবি ?
শূধু কথায় আছে, কাজের বেলায় ঠন ঠনা।
                                     ১১-০১-২০১২

                           

কবি ও লেখক
                সাইফুল ইসলাম
                ঘাটাইল, টাঙ্গাইল
                ০১৭১৫-৭৯৩৫৭০












আসা যাওয়ার মাঝেই আছি সবাই একবার করে,
আসার মাঝে পূর্ব পরিকল্পনা থাকলেও
যাওয়ার মাঝে হঠাৎ করে যাওয়া।
যাওয়া পরে সবাই বুঝে সে এখন কোরআনের সত্যতায় মিলেছে।
কখন গেল ! কখন ঐ চোখ বন্ধ হয়ে পৃথিবীর আলো হারালো ?
নিম পাতা জাম পাতার সাথে গরম জল মেখে গোছল,
তিন কিংবা পাঁচ কাপড়ের ঢাকনা,
সারে তিন হাত জমিনেই সকল জমিদারি হবে।
কোন উজির নাজির পেয়াদা  ও প্রজা নেই।
এখন রব দ্বীন ও রাসূল নিয়ে প্রশ্ন,
জবার দাও  হে বান্দা !


শক্তিহীন দেহে দেখি দাউদাউ জ্বলে আগুন,
পুড়ে যায় আমার মন পুড়ে যায় দুনিয়ার সবটুকু প্রেম,
মাটির ভিতর থেকে কম্পন আসে,
নড়ে উঠে সারা আসমান।
কোথাও কোন আবাসন নেই,
যত দূর চোখ যায় কাঠ কয়লার ছাই আর ছাই,
তা ছূঁতে গেলে রক্তের গতি থেমে যায়।
চামরার ভিতরে দ্রত বিষ ছড়ায়।

তিন কোটি বছর পরে কেউ জানবে
ফুল গুলো ব্যর্থ হয়ে মারা গেছে
কোন কবি ও লেখকরা লেখার ভাষা খুঁজে পাবে না।
ফুলের এমন অকাল মরণ কবিরা সহজে মেনে নেবে ?
যে কবির মনে ফুলের প্রতি দরদ নেই সে কবি হতে পারবে না,
তাই সত্যিকার কবি ও লেখকরা আন্দোলনে নেমে পড়বে,
সেদিন জানবো আমি সত্যিকার প্রেমে মজেছিলাম,
২৪-০২-২০১২


আজ কুয়াশায় চাদর গায়ে জড়িয়ে-
আমি স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করব।
বারোটা এক মিনিটে আমরা দেখতে পাবো
কোটি বাঙালি তাঁদের লাখো মা বোনের বিনিময়ে
কী চেহারার স্বাধীনতা পেলাম ?
সময় এখন রাত এগারোটা পঁয়তাল্লিশ,
আর মাত্র পনের মিনিট বাকি,
তারপর মুক্তিকামি বাঙালিদের মুখের বুলি কী হতে পারে ?
কেউ কী কাঁদবে তখন  ?
কাঁদার তো কথা নয় !
এই দেশের আলো বাতাসের গন্ধ তখন কেমন হবে ?
আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করিনি,
যাঁরা করেছেন তাঁরাই ঐ শেকড়ের গন্ধ বুঝতে পারবেন।
আর যাঁরা এর বিপক্ষে থেকেছেন তাঁরাও বুঝবেন,
দড়ি এবার গরু ছাগল ভেড়ার গলা বাদ দিয়ে-
তাঁদের গলায় ঝুলতে থাকবে।

                                                                 ১১-১২-২০১১


দুঃখরা দুঃখ পুষে দুঃখ নিয়ে স্বর্গে চলে যায়,
কাদা মাটি জল কথা কয় দেউলিয়াপনার সাথে
গল্পটা জীবনের সাথে মিশে থাকে
যদি বলা হয় তোমাদের চাওয়ার কী আছে ?
ওরা বলবে, এক গ্লাস গরম দুধ হবে ?
অনেক দিন মায়ের বুকের দুধ পাইনা
স্বাদটা কী তাই মনে নেই।
আমার বিশ্বাস দুঃখরা অমন কিছু জানতে চাইবে না
ওরা নিজেরাই যেখানে দুঃখে, সেখানে অন্যের জন্য বারোতা
আনবে কিভাবে ? ফুলের কাছে গিয়ে বললাম, দু-পোয়া সুগন্ধি দাও,
কালটা দুর্বিসহ হয়ে যাচ্ছে।
নাকের ঢগায় তা ঝুলিয়ে রাখবো।
ফূল কোন কথা বলেনি,
হয়তো বলার প্রয়োজন মনে করেনি।
অবশেষে দুঃখরা স্বর্গে যায়নি।
যাওয়া ততটা সহজ ছিলনা।
দেউলিয়াপনায় ভর করে এখন ওরা পথের ধূলো মাত্র।
সেখানে কুকুড় দাঁড়িয়ে পেচ্ছাব করে, মানুষ একইভাবে করে।


আমাকে তুমি ভালোবাসো ?
তবে তোমার বুকে আমায় জড়িয়ে তা দেখাও না !
মাটি দিয়ে বানানো মাংসে কি থাকতে পারে,
একটু দেখতে ইচ্ছে হয়েছে।
নিরেট হবে, নাকি স্পঞ্জ ?
বাতাসের ধাক্কা লাগলে কি ঢোলে,
হাত দিলে কি সুর সুরি হয় ?
কিছু একটা বলো ?
পেছনের বাতাসেরা কিন্তু আমাকে
তোমার দিকে ধাক্কা দিচ্ছে,
আমি জোর করে স্থির আছি, তোমার দিকে ঝোকে পড়বো ?
এক কোটি বৎসরের নেশা আমার মনে আজ ভর করেছে
 তোমাকে আজ বলতেই হবে আমি কি চাই ?
এবং দিতে প্রস্তুত হও।
আচ্ছা ঘরটা কী কাদা ও ইটের হবে ?
কোন বালি কিংবা সিমেন্ট থাকবে না ?
 দেয়ালের রংটা কি হবে ?
সাদাটা কী বদলানো যাবে ?
কি হল, ভাবনাটা বলো ?
বুঝেছি জোর ছাড়া কাজ হবে না।
ধপাস !
মা মাগো, মরে গেলাম !
মা শোয়া থেকে উঠে আমাকে তোলে বলল-
 স্বপ্ন দেখেছিস ?


পেছনের দরজার মত তুমি আমায় ফেলে চলে গেলে-
কোন সে মনিহারের আশায় ?
কোন কল্পনায় মজে না তো ?
সেখানে কিন্তু দহনকাল থাকতে পারে,
যেমনটিতে এখন আমি আছি।
কখনো দাউ দাউ আগুনের ফুলকি,
কখনো মরিমহে বিষাক্ত বিষের ছোবল।
তুমি যদি এতে মজে থাকো তবে আমি কেমন আছি বুঝবে,
তুমি অনুভব করবে ব্যর্থ প্রেমের তলাতলে কী থাকে।
তখন ভেবে নেবে প্রেম বলতে বুঝায় কিছু কালো উড়ন- ধূলো,
যা গায়ে লাগলে পৃথিবীর কোন সাবান অথবা ডিটারজেন্ট পাউডার তা সারতে পারে না।
আমি এখন গরম জলের চুল্লিতে আছি দহনকাল সরাতে,
সরছে না, আরও লেগে যাচ্ছে,
জানি এর সবটুকুই ব্যর্থতা
পাওয়া শুধু মনের খায়েশ মেটানো।


ডান হাতের আঙ্গুলগুলো
আজ ১৬ই ডিসেম্বর,
একটা যন্ত্রনার কাল পেরিয়ে আলোর ইশারা।
গতকাল কী ছিল তা মনে করে দুঃখ পেতে চাই না,
শুধু বলতে চাই তাঁদেরকে তুই নাম ধরে ডেকে,
এই কুত্তা ও শুয়রের দল ? তোরা আজ ঘরের বাহিরে যাস না,
মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে পড়লে কিন' ক্ষমা নেই।
তোরা তো মরবি ঠিকই,
তবে আজ কোন নতুন রক্তাক্তের কাহিনীতে নয়,
আজ বিজয়ের মিছিলে তোদের ছায়াও যেন না পড়ে।
যেতে চাইলে রাত বারোটার আগেই অনেক দূরে চলে যাস,
তোদের পদধ্বনি যেন যোদ্ধাদের কানে না আসে।
আজ মুক্তিকামি বাঙালিরা মা বোনের বিনিময়ে নতুন পাওয়ায় মজেছি,
কিন' ভুলিনি তোদের ডান হাতের আঙ্গুলগুলো,
যা দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিস,
ঐ বাড়িতে সুন্দুরি মা ও মেয়ে আছে,
চলেন হুজুর, খায়েশ মেটাবেন।

                                                                ১১-১২-২০১১



                        কবি ও লেখক
                        সাইফুল ইসলাম
                        ঘাটাইল, টাঙ্গাইল
                

বিজয়ের পতাকা, স্বাধীনতার পতাকা
ওটা কী উড়ে আকাশের বুক জুড়ে,
 ভূমি থেকে সামান্য ওপরে ?
আপনি ওটা উড়ার কারণ জানেন ?
কিছুদিন আগেও তো অমনভাবে উড়তে দেখিনি।
কী দুঃসাহস নিয়ে উড়ছে,
আর ওর বাতাসগুলো বাংলাদেশের সকল
আনাচে কানাচে মিশে যাচ্ছে।
কী সু-বাতাস ! যেন মায়ের বুকে
ছোট সন্তানরা মুক্ত মনে উল্লাসে মেতেছে।
এই বাতাসের মূল্য অনেক,
তা ছেলের পেটের দেড় কেজি কলিজার বিনিময়ে,
মা কিংবা বোন অথবা বউয়ের মান সম্মান হারানোর বদলে,
বউয়ের থেকে স্বামী কিংবা স্বামীর থেকে বউয়ের বন্ধন লুটে।
আপনি কথা বলতেছেন না কেন ?
আপনার মুখে আজ হাসি নেই কেন ?
মনে হচ্ছে আপনার পবিত্র মুখে কাক হাগু করে দিয়েছে,
এই নিন রুমাল, মুখটা মুছে নিন,
আসেন হাত তোলে ওকে একটা সম্মান জানাই।
ওটা বাংলাদেশের পতাকা
বিজয়ের পতাকা, স্বাধীনতার পতাকা,
ওর বাতাস থামবেনা,
পরাধীনতাও এই বাংলাদেশে আর আসবেনা।
                                                                            ১১-১২-২০১১


                        কবি ও লেখক
                        সাইফুল ইসলা
                        ঘাটাইল, টাঙ্গাইল
                    



আমরা মাটি। মাটির সকল গুণে গুণানিত-
স্রষ্টার তরে গোলাম আমরা।
কত দায়িত্ব আমাদের মাথায় !
তার আগে নিজেকে গড়া চাই,
তারপরেই না অন্যকে দিশা দেওয়া পালা।
আমরা জাতি হিসেবে বর্তমানে তা কি মানতেছি ?
নিজেই জানি না অথচ অন্যকে জানাতে যাই।
কি জানাতে চাই, এমন প্রশ্নে জবারে উত্তর হয়, সবই।
তাহলে আসুন মূল আলোচনায় যাই,
মানুষ মানুষের জন্য, ইহা ভূপেন দা বললেও
তা কিন্তু কালের কালে বহূ পূর্বেই উচ্চারণ হয়েছে।
আর তা যদি নাই হতো তবে মানুষকে স্রষ্টা সৃষ্টির সেরা
জীব হিসেবে চিহ্নিত করতেন না।
মাটির ধর্ম তো ঠিকই আছে
কিন্তু তার থেকে সৃষ্টি আমরা তো মাটির মত সত্য হতে পারিনি।
আমরা আমাদের রক্ত চোষে খাচ্ছি,
অনাহারি মানুষদেরকে আমরা ক’জন ছোট জাতের বলতেছি,
সেই ক’জনের সংখ্যা অবিরাম বাড়তেছে,
কিন্তু কেন ?
আমরা এখন মানুষের মধ্যে পড়িনা,
অন্যান্য সৃষ্টির সাথেও মিলতে পারি না,
তাঁরাও আমাদের কাছে আসে না,
  আমাদের ব্যর্থ মানুষের মুখে
ঘৃনা আর থুঁ থুঁ দিয়ে যান।

                                                    ১৬-১১-২০১১

                    কবি ও লেখক
                সাইফুল ইসলাম
                ঘাটাইল, টাঙ্গাইল




সময় চলে যায়, তার নিজের আবেশে।
এই তো সেদিনের কথা,
ষোল বছর কিংবা কিছু কম বেশী হবে,
ডিমকে মিম বলার কালটা কী ও ভূলে গেছে ?
বাম হাতের আঙ্গুল, ও সব সময় ওর মুখে দিয়ে রাখত
তার জন্য আমি ধমক দিতাম,
ও আমার পানে চেয়ে কাঁদতো,
মনে হতো আমার বুকটা বুঝি ছিঁড়ে যাচ্ছে।
তারপর থেকে ধমকটা কমিয়ে দিলাম,
এক সময় আর দেই নি, ও আর মুখে আঙ্গুল দেয় নি।

ওর জন্মের কথা কী ওর মনে আছে ! হয়তো নেই,
কিন্তু আমার মনে আছে ।
চিকন চাকন দেহটা এদিক সেদিক হেলে পড়ত,
যারা কোলে নিতে চাইতো তাদের কোলেই চলে যেতো।
কী এক মায়াবি রুপে তার রুপান্তর দড়িয়া !
তা দেখে ফুল কলিরা তাদের নিজেদের সাথে ঝগড়া শুরু করে দিতো,
হয়তো বলতো, আমাদের রুপ এই মানব জাতি কিভাবে পেলো ?
ওদের ঝগড়া হয়তো এক সময় থেমে গেছে,
তাতে ওর রুপের কোন কমতি ঘটে নি।
যে রুপে আমার নজর পড়েছে তা কী কমতে পারে !

অবিরাম সময় চলে যাচ্ছে, ডিমকে এখন মিম কিংবা আন্ডা ও কিছূই বলে না,
এখন কী বলে তা জানি না,
এখন বাম হাতের আঙ্গুলও মুখে পুরে দেয় না।
তবে ঠোঁটে লিপিষ্টিক দেয়, চোখে কাজল বসায়,
দু-গালে কত না ক্রিম মাখে, আয়নার সামনে গিয়ে নিজেকে দেখে নেয়।
তার মাকে বলে, মা ! দেখো তো কেমন লাগছে ?
মা বলেন, স্কুলে যেতে কি এতো সাঁজ করতে হয় ? নাকি অন্য কোথাও যাবি ?
ও কোন জবাব দেয় না। হয়তো তাই, কোথাও যাবে।
এখন কি ডানা চুপসে রাখার সময় ! ঐ ডানাতে শক্তি আছে, তা প্রেমের তুফান বাওয়ার মত।

আমি ওকে কবে মনের বলতে পারব ?
ওর সাথে আমার কোন তুলনাই হয় না।
ওর কাছে দাঁড়ালে আমাকে কাজের ছেলের মত মনে হয়।
আমি আয়নায় নিজেকে দেখে বলি, এ কার ছবি ! আমার ?
একদিন ওর সাথে আমি ওর স্কুলে বেড়াতে গেলাম,
ও আমাকে ক’জন ছেলেকে দেখিয়ে বলল-
এই স্কুলের সব ছেলে মেয়েরা দেখতে সুন্দর।
আমি মুহূর্তেই যেন চুপসে গেলাম।
এখনো চুপসে থাকি,
ওর সামনে দাঁড়াতে গেলেই আমি আমার পানে তাঁকাই, কেমন লাগছে আমায় ?
ওর বিয়ে হয়ে গেছে, আমি তা ক’দিন পরে জেনেছি।
তারপর একবার ওর মুখখানি দেখার ইচ্ছে আমার হয় নি।
ওকি ভালো আছে ? হয়তো আছে, কিংবা নেই।
তবে এ কথা সত্যি, ও আমাকে নিয়ে একটুও ভাবে নি,
আমিই শুধু ভেবেছি, ভাবছি, ভেবে যাবো জনম জনম।
                                ১৬-০১-২০১২               
                                সাইফুল ইসলাম
                                ঘাটাইল, টাঙ্গাইল


বুকের ভিতর কষ্টেরা জ্বালাতন করে,
ক্ষণে ক্ষণে উত্তাল রাহাজারি হয়
কী মূল্য আছে এই জীবনের ?
কী হবে আর ব্যর্থ স্বপ্ন দেখে ?
অস্বপ্নের যাত্রায় ভর করে চলতে আর ভালো লাগেনা।
যেদিন ও চলে গেছে,
সেদিন থেকেই মাটির সাথে মিশে গেছি
এখন শুধু ওখানে শোয়ার পালা।
যতবার ইচ্ছে করে তোমায় খুন করব
ততবারই ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসি।
সেই আসা যেন আসা নয়, চরম ভাবে পরাজিত হওয়া।
আমি ভেবে পাচ্ছিনা কী করব ?
রক্ত দেখলেই আমার ভয় করে, তাহলে খুন করব কীভাবে ?
নাহ্‌ ! একবার গিয়ে ওকে দেখিনা ও কেমন আছে ?
ভালোবাসার মানুষকে কী খুন করা যায় ? যায় না।
এ আমার শ্রেষ্ট ভালোবাসার বহুরুপি ভাবনা।

২০-০২-২০১২
কবি ও লেখক
সাইফুল ইসলাম
ঘাটাইল, টাঙ্গাইল।



sislam8405

{Facebook#https://www.facebook.com}

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

luoman থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget