যুবতি ছিলাম, হলাম বুড়ি, রক্ত মাংস শুকিয়ে গেল
ধনি বাপের মেয়ে আমার গরিব ঘরে বিয়ে হল,
বাপের কথায় করিনি মানা বিয়েটা হয়ে গেল
আগে হয়নি স্বামীকে দেখা, বাসর ঘরে হল,
নীরবে কাঁদি বুকটা ভাসাই আমার কপাল গেল
ভালোবাসতে চায় না মন স্বপ্ন বিফল হল,
মুখটাতে নেই একটু মায়া মাঝের দাঁত ফাঁকা
গায়ের চামরা কুৎসিত নয় তবুও যে কালোয় মাখা ।
নিজের কপাল থাপড়াই আমি স্বামীর অগোচরে
কীসের বিয়ে হল আমার এ কোন স্বামীর তরে
সময় চলে সময় আসে কোল জুড়ে এলো সন্তান
সুখ তো নয় সুখের অসুখ দুঃখে ভরে প্রাণ
ভাবলাম আমি যা হয়েছে সবই মেনে নিলাম
স্বামীর ভাবটা হয় না ভালো পরকীয়া যে পেলাম
সব সহ্য করব আমি করব না পরকীয়া
আমি তো আর কম নই অবহেলার ছায়া ?
স্বামীর ঘর ফেলে যাবো চলে বাপের বাড়ি ?
কালুকে হায় দেখবে কে আমার প্রাণের ঘুড়ি ?
যাচ্ছি ফেলে স্বামীর ঘর কারণ আমি জানি
কালোর স্বামীর মনটাও কালো ভালো হয়নি।
কিছুদিন পর জানতে পারি স্বামী করছে বিয়ে
আমার বাপও গেছেন মারা আমার দুঃখ নিয়ে
ভাইয়েরা আমার বিয়ে নিয়ে আর তো ভাবেনা
মা ও আমি ভেবে কোন কুল কিনারা পাই না
হঠাৎ করে মা’ও গেলেন বাপের মত চলে
স্বপ্ন আশা নিপাত হল দুঃখ আঁচলে।
একদিন শুনি কালুর অসুখ বুকটা উঠে চমকে
যাবো কি না ভাবছি তাই দেখতে কালুকে
শরম ফেলে গেলাম বাড়ি স্বামী নেই বাড়ি
আমায় দেখে সতীন ভাবে দুঃখে মরি মরি
আমি বলি ভয় পেয়ো না থাকতে আসিনি
প্রাণের পরাণ দেখতে এলাম ভুলতে পারিনি
কেমন আছো ওগো বোন, এই কালুকে দেখো
আর তো নেই আমার কেউ আগলে বুকে রেখো।
তার কিছূদিন পরে শুনি কালু গেছে মারা
তিন ভুবনে সবই হারা আমি পাগল পারা
বয়স বাড়ে চামরা ঢিলে রক্ত মাংস টলে
বিয়ের বয়স আরও আছে কেউ না আমায় বলে
নিজের ভূলে স্বামী ছাড়া আমি অহংকারী
স্বামীর ভুল একটু ছিল, ক্ষমা না করি
বয়স এখন আমার আশি, যৌবন টলে হল বাসি
বৃষ্টির কাছে জল চাই থুঁ থুূ নিয়ে আসি
কালুর মা আমি কী ? কেউ না মুখে বলে
আমি জানি এখনো পেটে কালু কথা বলে।
২২-০২-২০১২
কবি ও লেখক
সাইফুল ইসলাম
ঘাটাইল, টাঙ্গাইল
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন