সময় চলে যায়, তার নিজের আবেশে।
এই তো সেদিনের কথা,
ষোল বছর কিংবা কিছু কম বেশী হবে,
ডিমকে মিম বলার কালটা কী ও ভূলে গেছে ?
বাম হাতের আঙ্গুল, ও সব সময় ওর মুখে দিয়ে রাখত
তার জন্য আমি ধমক দিতাম,
ও আমার পানে চেয়ে কাঁদতো,
মনে হতো আমার বুকটা বুঝি ছিঁড়ে যাচ্ছে।
তারপর থেকে ধমকটা কমিয়ে দিলাম,
এক সময় আর দেই নি, ও আর মুখে আঙ্গুল দেয় নি।
ওর জন্মের কথা কী ওর মনে আছে ! হয়তো নেই,
কিন্তু আমার মনে আছে ।
চিকন চাকন দেহটা এদিক সেদিক হেলে পড়ত,
যারা কোলে নিতে চাইতো তাদের কোলেই চলে যেতো।
কী এক মায়াবি রুপে তার রুপান্তর দড়িয়া !
তা দেখে ফুল কলিরা তাদের নিজেদের সাথে ঝগড়া শুরু করে দিতো,
হয়তো বলতো, আমাদের রুপ এই মানব জাতি কিভাবে পেলো ?
ওদের ঝগড়া হয়তো এক সময় থেমে গেছে,
তাতে ওর রুপের কোন কমতি ঘটে নি।
যে রুপে আমার নজর পড়েছে তা কী কমতে পারে !
অবিরাম সময় চলে যাচ্ছে, ডিমকে এখন মিম কিংবা আন্ডা ও কিছূই বলে না,
এখন কী বলে তা জানি না,
এখন বাম হাতের আঙ্গুলও মুখে পুরে দেয় না।
তবে ঠোঁটে লিপিষ্টিক দেয়, চোখে কাজল বসায়,
দু-গালে কত না ক্রিম মাখে, আয়নার সামনে গিয়ে নিজেকে দেখে নেয়।
তার মাকে বলে, মা ! দেখো তো কেমন লাগছে ?
মা বলেন, স্কুলে যেতে কি এতো সাঁজ করতে হয় ? নাকি অন্য কোথাও যাবি ?
ও কোন জবাব দেয় না। হয়তো তাই, কোথাও যাবে।
এখন কি ডানা চুপসে রাখার সময় ! ঐ ডানাতে শক্তি আছে, তা প্রেমের তুফান বাওয়ার মত।
আমি ওকে কবে মনের বলতে পারব ?
ওর সাথে আমার কোন তুলনাই হয় না।
ওর কাছে দাঁড়ালে আমাকে কাজের ছেলের মত মনে হয়।
আমি আয়নায় নিজেকে দেখে বলি, এ কার ছবি ! আমার ?
একদিন ওর সাথে আমি ওর স্কুলে বেড়াতে গেলাম,
ও আমাকে ক’জন ছেলেকে দেখিয়ে বলল-
এই স্কুলের সব ছেলে মেয়েরা দেখতে সুন্দর।
আমি মুহূর্তেই যেন চুপসে গেলাম।
এখনো চুপসে থাকি,
ওর সামনে দাঁড়াতে গেলেই আমি আমার পানে তাঁকাই, কেমন লাগছে আমায় ?
ওর বিয়ে হয়ে গেছে, আমি তা ক’দিন পরে জেনেছি।
তারপর একবার ওর মুখখানি দেখার ইচ্ছে আমার হয় নি।
ওকি ভালো আছে ? হয়তো আছে, কিংবা নেই।
তবে এ কথা সত্যি, ও আমাকে নিয়ে একটুও ভাবে নি,
আমিই শুধু ভেবেছি, ভাবছি, ভেবে যাবো জনম জনম।
১৬-০১-২০১২
সাইফুল ইসলাম
ঘাটাইল, টাঙ্গাইল
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন